Quotex – স্ক্যাম নাকি নির্ভরযোগ্য ব্রোকার? সম্পূর্ণ বাইনারি অপশন ব্রোকারেজ ও প্রতিদ্বন্দ্বী তুলনা (2025)

Quotex হল একটি অনলাইন ব্রোকার, যা ২০১৯ সালে বাইনারি অপশন ট্রেডিং পরিষেবা নিয়ে আত্মপ্রকাশ করে। এখানে মূলত স্বল্প সময়ের জন্য “ফিক্সড-প্রফিট” অথবা “টার্বো অপশন” ট্রেড করা হয়, যেখানে খুব কম সময়ে অ্যাসেটের দাম বাড়বে না কমবে তা পূর্বাভাস করতে হয়। কোম্পানিটি অফশোর রেজিস্ট্রেশনভুক্ত এবং বৈশ্বিকভাবে পরিষেবা সরবরাহ করে, সহজ ট্রেডিং সিস্টেম ও উচ্চ পেআউটের প্রতি জোর দেয়। তুলনামূলকভাবে নতুন হলেও, বৈচিত্র্যময় ট্রেডিং টুল এবং উচ্চ আয়ের প্রতিশ্রুতির কারণে Quotex বিশ্বজুড়ে ট্রেডারদের মনোযোগ আকর্ষণ করতে সক্ষম হয়েছে। উদাহরণ হিসেবে, Android-এ Quotex অ্যাপ ১ কোটিরও বেশি বার ডাউনলোড হয়েছে, যা এর ব্যবহারকারী ভিত্তি দ্রুত সম্প্রসারিত হওয়ার লক্ষণ।

Quotex-এর নিয়ন্ত্রণ ও বিশ্বাসযোগ্যতা

Quotex একটি অফশোর কোম্পানি দ্বারা পরিচালিত হয় এবং কোনো বিখ্যাত সরকারি আর্থিক সংস্থার (যেমন, CySEC, FCA ইত্যাদি) লাইসেন্স নেই। কঠোর নিয়ন্ত্রক তদারকির পরিপ্রেক্ষিতে, Quotex আনিয়ন্ত্রিত প্ল্যাটফর্ম হিসেবেই রয়ে গেছে এবং গ্রাহকদের তহবিল নিশ্চিত রাখার মতো সংস্থা বা ক্যাপিটাল সুরক্ষার কোনো নিশ্চয়তা এখানে নেই।

উল্লেখযোগ্য যে বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠান ইতোমধ্যে Quotex-এর কার্যক্রম সম্পর্কে সতর্কবার্তা প্রকাশ করেছে। ২০২১ সালের ডিসেম্বরে, ইতালির কমিশন CONSOB Quotex-কে অবৈধ মধ্যস্থতাকারী হিসেবে তালিকাভুক্ত করে, কারণ তারা প্রয়োজনীয় অনুমোদন ছাড়াই পরিষেবা সরবরাহ করছিল। এর আগে, ২০২১ সালের জুনে, স্পেনের আর্থিক নিয়ন্ত্রক (CNMV) বিনিয়োগকারীদের সতর্ক করে জানিয়েছিল যে Quotex লাইসেন্স ছাড়াই কাজ করছে। ২০২৩ সালে, পর্তুগালের সিকিউরিটিজ কমিশন (CMVM) একইভাবে জানায় যে Quotex দেশটিতে আর্থিক পরিষেবা দেওয়ার অনুমতি পায়নি। এ ছাড়া, ভারতের রিজার্ভ ব্যাঙ্ক (RBI) Quotex (quotex.com)-কে তার আলার্ট লিস্টে যোগ করেছে, যেখানে অননুমোদিত ফরেক্স/ট্রেডিং প্ল্যাটফর্মগুলিকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। এইভাবে, বেশ কিছু দেশের সরকারি দৃষ্টিতে Quotex একটি অবৈধ বাজার-অংশীদার হিসেবে বিবেচিত।

গ্রাহকদের জন্য এটি ঝুঁকি বৃদ্ধি করে। কোনো নিয়ন্ত্রক কাঠামো না থাকার দরুন, যদি অর্থ উত্তোলন সংক্রান্ত সমস্যা বা বিতর্ক দেখা দেয়, তাহলে সরকারি কোনো সংস্থার কাছে নালিশ করার সুযোগ থাকে না। হ্যাঁ, Quotex সাইট এসএসএল এনক্রিপশন ইত্যাদি নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা ব্যবহার করে, তবে প্রতিষ্ঠানের অনিয়ন্ত্রিত আইনগত অবস্থানের কারণে আর্থিক নিরাপত্তা প্রশ্নসাপেক্ষ। জানা যায় যে, এই ব্রোকার অফশোর ভিত্তিক বিভিন্ন কোম্পানির মাধ্যমে রেজিস্টার করা (কিছু তথ্যে Maxbit LLC সেন্ট ভিনসেন্ট ও গ্রেনাডাইনস, ON Spot LLC সেন্ট কিটস ও নেভিসের অন্তর্ভুক্ত), যা আইনি তদারকিকে দুরূহ করে তোলে। পাশাপাশি, প্ল্যাটফর্মের কোনো স্বাধীন অডিট নেই।

প্রথমবার অর্থ উত্তোলনের আগে Quotex গ্রাহকদের KYC (Know Your Customer) পদ্ধতির মাধ্যমে পরিচয় যাচাই করতে অনুরোধ করে। এর আওতায় পাসপোর্ট, পরিচয়পত্র, ঠিকানার প্রমাণ ইত্যাদি ডকুমেন্ট জমা দিতে হয়। এই যাচাই মূলত অ্যাকাউন্ট সুরক্ষিত করা ও প্রতারণা এড়ানোর জন্য। ওয়েবসাইটের FAQ-এ স্পষ্ট করে বলা আছে যে, আগেভাগে পরিচয়পত্র যাচাই করলে উত্তোলনে দেরি হবে না। তবে, অভ্যন্তরীণ এই ব্যবস্থা বাইরের কোনো নিয়ন্ত্রক অভাবের ঘাটতি মেটাতে পারে না।

Quotex-এ ট্রেডিং করতে গিয়ে বিভিন্ন ঝুঁকি হতে পারে, যেমন অর্থ উত্তোলন দেরি হওয়া বা বাতিল হয়ে যাওয়া, বোনাস শর্ত একতরফাভাবে পরিবর্তন, নিয়ম লঙ্ঘনের অজুহাতে অ্যাকাউন্ট বন্ধ করে দেওয়া— এসবের কথা নিয়মিতই শোনা যায়। অনেক রিভিউতে দেখা যায়, মানুষ অভিযোগ করছেন যে উত্তোলন অনুরোধ বাতিল হয়েছে বা ধারাবাহিক লাভের পর অ্যাকাউন্ট হঠাৎ ব্লক করা হয়েছে।

তবে, নেতিবাচক পর্যালোচনাগুলো প্রমাণসহ খুব একটা সামনে আসে না— প্রতিদ্বন্দ্বী কোম্পানি বা ক্ষুব্ধ ট্রেডাররা (যারা টাকা হারিয়েছেন) উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে লিখে থাকতে পারেন। আবার, নিয়ন্ত্রিত ব্রোকারদের ক্ষেত্রেও এমন নেতিবাচক মতামত পাওয়া যায়। অন্যদিকে, এসব পর্যালোচনা Quotex-এর লক্ষ লক্ষ ব্যবহারকারীকে লাভ উত্তোলনে বাধা দিচ্ছে না।

Quotex ট্রেডিং প্ল্যাটফর্ম ও টুল

Quotex নিজস্ব ওয়েব-ভিত্তিক ট্রেডিং সফটওয়্যার সরবরাহ করে, যা কোনো ডাউনলোড ছাড়াই ব্রাউজারে সরাসরি চালানো যায়। ইন্টারফেস এমনভাবে ডিজাইন করা হয়েছে, যাতে নতুন ও অভিজ্ঞ ট্রেডার উভয়েই স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন। স্ক্রিনে একসঙ্গে নির্বাচিত অ্যাসেটের গ্রাফ ও অর্ডার প্যানেল দেখা যায়। বিন্যাসটি সাধারণ ও সহজবোধ্য: বাম পাশে সাধারণত অ্যাসেট তালিকা, মাঝখানে ইন্টারঅ্যাকটিভ চার্ট, আর ডান পাশে ট্রেড সেট আপ করার জন্য (অ্যাকাউন্ট ব্যালান্স, এক্সপিরেশন টাইম, রেট ইত্যাদি) এবং “Up”/“Down” বোতাম থাকে। নেভিগেশনও পরিষ্কার, এবং প্ল্যাটফর্মটি বিভিন্ন ভাষা সাপোর্ট করে (ইংরেজি, রাশিয়ান সহ) যা বৈশ্বিক ট্রেডারদের জন্য সুবিধাজনক।

Quotex-এর ওয়েব ভার্সন আধুনিক যেকোনো ব্রাউজারে কাজ করে, আলাদা ইনস্টলেশন প্রয়োজন হয় না। এটি বিভিন্ন স্ক্রিন সাইজের জন্য অপ্টিমাইজ করা, ফলে কম্পিউটার, ফোন অথবা ট্যাবলেটে ব্রাউজার থেকেই ট্রেড করা যায়। ওয়েব-টার্মিনালের পাশাপাশি, ব্রোকারের একটি মোবাইল অ্যাপও রয়েছে (যা পরে বিস্তারিত আলোচিত হবে)। উভয় ক্ষেত্রেই মূল ফিচার— অ্যাসেট নির্বাচন, টেকনিক্যাল অ্যানালাইসিস, ট্রেড প্লেসমেন্ট, ডিপোজিট ও উত্তোলন— সবই একই রকম।

Quotex প্ল্যাটফর্মে একাধিক গ্রাফ টাইপ সাপোর্ট করে: লাইন চার্ট, ক্যান্ডেলস্টিক (জাপানি ক্যান্ডেল), বার চার্ট, এবং হেইকিন আশি যা ট্রেন্ডকে কিছুটা “স্মুদ” করে দেখায়। ট্রেডাররা ৫ সেকেন্ড থেকে ১ দিন পর্যন্ত বিভিন্ন টাইমফ্রেমে চার্ট দেখতে পারেন, যা স্বল্প-মেয়াদি বাইনারি অপশন থেকে তুলনামূলক দীর্ঘ বিশ্লেষণের জন্য উপযোগী। উদাহরণস্বরূপ, এক-দুই মিনিটের ট্রেডের জন্য ১৫ সেকেন্ড বা ১ মিনিটের টাইমফ্রেম দেখা যেতে পারে, আবার বড় ট্রেন্ড বুঝতে ১ ঘণ্টা বা দৈনিক চার্ট দেখতে পারেন।

Quotex জানায় যে তারা কিছু ট্রেডিং সিগন্যাল দেয়। প্ল্যাটফর্মে একটি “Signals” সেকশন থাকে, যেখানে নির্দিষ্ট অ্যাসেট, সম্ভাব্য দিক (দাম বাড়বে না কমবে), এবং নির্ধারিত সময়ের পরামর্শ উল্লেখ করা থাকে।

প্ল্যাটফর্মের অন্যান্য ফিচারের মধ্যে রয়েছে:

• লিডারবোর্ড – Quotex হয়তো দৈনিক বা সাপ্তাহিক ভিত্তিতে শীর্ষ সফল ট্রেডারদের তালিকা দেখায়, প্রেরণা ও ধারণা দিতে।
• ইকোনমিক ক্যালেন্ডার বা নিউজ – কিছু বাইনারি ব্রোকার গুরুত্বপূর্ণ আর্থিক ইভেন্ট বা সংবাদ দেখায়। তবে Quotex তুলনামূলকভাবে টেকনিক্যাল সিগন্যালের দিকেই জোর দেয় বলে মনে হয়।
• শিক্ষামূলক কন্টেন্ট – অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে FAQ, বেসিক আর্টিকেল কিংবা ব্লগ পোস্ট রয়েছে, যেখানে প্ল্যাটফর্মের কাজের প্রক্রিয়া ও ট্রেডিং টিপস দেওয়া আছে।

Quotex-এ যে অ্যাসেট ও পেআউট পাওয়া যায়

Quotex-এর অন্যতম বড় সুবিধা হল বিস্তৃত অ্যাসেট রেঞ্জ। ব্রোকার দাবি করে যে তাদের প্ল্যাটফর্মে ১৫০টিরও বেশি ইন্সট্রুমেন্ট আছে। এগুলোকে কয়েকটি ক্যাটাগরিতে ভাগ করা যায়:

• কারেন্সি পেয়ার (ফরেক্স) – ডজন ডজন পেয়ার, যেমন ইউরো/মার্কিন ডলার (EUR/USD), পাউন্ড/মার্কিন ডলার (GBP/USD), মার্কিন ডলার/ইয়েন (USD/JPY) ইত্যাদি, পাশাপাশি মাইনর ও এক্সোটিক পেয়ার।
• ক্রিপ্টোকারেন্সি – বিটকয়েন, ইথেরিয়াম, লাইটকয়েন, রিপল ইত্যাদি জনপ্রিয় ডিজিটাল কয়েন ও তাদের ক্রস রেট। ট্রেডাররা কোইন না রেখেও স্বল্পমেয়াদে দাম বাড়া-কমা থেকে মুনাফা করতে পারেন।
• ইনডেক্স – বিশ্বের প্রধান স্টক মার্কেট সূচক (S&P 500, ডাউ জোন্স, NASDAQ, DAX, FTSE 100 ইত্যাদি), যেগুলোর সামগ্রিক বাজার প্রবণতা ট্রেড করা যায়।
• স্টক – Apple, Amazon, Tesla, Google-এর মতো প্রতিষ্ঠিত কোম্পানির শেয়ার। বাইনারি অপশন পদ্ধতিতে স্বল্পমেয়াদে শেয়ারের দাম ওঠানামা থেকে আয় করার সুযোগ থাকে।
• কমোডিটি – সোনা, রূপা সহ মূল্যবান ধাতু, তেল (Brent, WTI), প্রাকৃতিক গ্যাস ইত্যাদি এনার্জি পণ্য, কিছু কৃষিপণ্য (যেমন, কফি, গম) ইত্যাদি। ফলে, মুদ্রা ছাড়াও বিভিন্ন ক্ষেত্রে ট্রেডারদের ডাইভারসিফাই করার সুযোগ থাকে।

কোনো অ্যাসেটেই মূল ট্রেডিং ধারণা এক: এটি একটি “ফিক্সড-রিটার্ন” অপশন। সাধারণ শেয়ার বা ফরেক্স ট্রেডে লাভের পরিমাণ মূল্যের পার্থক্যের ওপর নির্ভর করে, কিন্তু বাইনারি অপশনে আগে থেকেই লাভের হার ঠিক করা থাকে। পেআউট রেট (অথবা লাভের শতাংশ) হল সেই উল্লেখযোগ্য সূচক, যা দেখে ট্রেডাররা কোনো ব্রোকার বেছে নেন।

Quotex সাধারণত শিল্পের মধ্যে শীর্ষ সারির পেআউট অফার করে— জনপ্রিয় অ্যাসেটে প্রায় ৮০% থেকে ৯৫% পর্যন্ত। অর্থাৎ যদি পূর্বাভাস সঠিক হয়, তাহলে ট্রেডার মূল পুঁজির সাথে অতিরিক্ত ৮০–৯৫% লাভ পেতে পারেন। উদাহরণস্বরূপ, EUR/USD-এর পেআউট ৯০% হলে, ১০০ ডলারের ট্রেড সাকসেসফুল হলে ১৯০ ডলার (৯০ ডলার লাভ সহ) ফেরত পাবেন। কোথাও কোথাও Quotex ৯৫% পর্যন্ত দাবি করে, আবার কিছু নির্দিষ্ট সম্পদ নির্দিষ্ট সময়ে ৯৮% পর্যন্ত যেতে পারে বলে উল্লেখ আছে। তবে বাস্তবে, মূল পরিসরই ৮০–৯৫%। তুলনা করলে দেখা যায়, অনেক প্রতিদ্বন্দ্বী ব্রোকার সাধারণত ৭০–৯০% অফার করে।

পেআউট রেট কীসের ওপর নির্ভর করে? স্বয়ং ব্রোকারই চলতি বাজারের তারল্য, অস্থিরতা, এক্সপিরেশন টাইম, এমনকি অ্যাকাউন্টের ধরন দেখে রিয়েল-টাইমে রেট নির্ধারণ করে। সর্বাধিক জনপ্রিয় ও উচ্চ লিকুইডিটি সম্পদ (প্রধান কারেন্সি পেয়ার, বড় ইনডেক্স ইত্যাদি) সক্রিয় মার্কেট সেশনে সাধারণত ৮৫–৯৫% পর্যন্ত রিটার্ন অফার করে। বরং কম সক্রিয় সময় বা অপেক্ষাকৃত কম জনপ্রিয় অ্যাসেটে ৭০–৮০% দেখা যায়। ৬০ সেকেন্ডের মতো অতি স্বল্পমেয়াদি ট্রেডে পেআউট একটু কমও হতে পারে, কারণ সেকেন্ডে সেকেন্ডে দামের ওঠানামা ঝুঁকিপূর্ণ।

কিছু ব্রোকার VIP ট্রেডারদের জন্য পেআউট বাড়িয়ে থাকে। Quotex-ও এর ব্যতিক্রম নয়— পরে দেখব, Pro ও VIP অ্যাকাউন্টধারীরা স্ট্যান্ডার্ডের চেয়ে কিছুটা বাড়তি রিটার্ন পান। সংখ্যায় হয়তো +২–৪% বেশি হতে পারে, কিন্তু বড় সংখ্যক ট্রেডের পর সেটাই লাভজনক পার্থক্য তৈরি করে।

তবে, ব্রোকার সাইটে দেখানো সর্বোচ্চ রেট সব সময় মেলেও নাও মিলতে পারে। বাজারে বড় কোনো নিউজ বেরোলে, অত্যধিক অস্থিরতা থাকলে Quotex সাময়িকভাবে পেআউট কমিয়ে দিতে পারে। ফলে ৯৫% হল এক প্রকার উচ্চতম সীমা, যা সাধারণত সহনীয় পরিস্থিতিতে পাওয়া যায়।

তারপরও, Quotex উচ্চ রিটার্ন অনেকাংশেই বজায় রাখে। রিভিউতে দেখা যায়, বড় অ্যাসেটগুলোর পেআউট খুব একটা ৮০%-এর নিচে নামে না। উল্টোদিকে, এত বেশি শতাংশ রিটার্ন সম্ভব হয় কারণ বাইনারি অপশন নিজেই উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ— এখানে হেরে গেলে পুরো স্টেক হারাতে হয়, আর জিতলে হয়তো ৯০% লাভ হয়। অতএব, এটিকে “সহজ টাকা” ভাবার কারণ নেই, ঝুঁকিও অধিক।

টেকনিক্যাল অ্যানালাইসিস ও Quotex-এর সিগন্যাল

Quotex-এ সফলভাবে ট্রেড করার জন্য প্ল্যাটফর্মেই বিস্তৃত টেকনিক্যাল টুল ব্যবহার করা যায়। আগে উল্লেখিত চার্টে অনেক টেকনিক্যাল ইন্ডিকেটর যোগ করা যায়। এর মধ্যে রয়েছে ট্রেন্ড-ভিত্তিক ও ওসিলেটর-ভিত্তিক বিভিন্ন ইনডিকেটর, যেমন:

• Moving Average (MA) – বিভিন্ন পিরিয়ড আর স্মুদিং অপশন সহ স্ক্রলিং গড়, যা মূল ট্রেন্ড নির্ণয়ে সাহায্য করে।
• Bollinger Bands – বাজারের অস্থিরতার পরিসর ও সম্ভাব্য দামের চরম বিন্দু নির্দেশ করে।
• Relative Strength Index (RSI) – ওভারবট/ওভারসোল্ড অবস্থা চিহ্নিত করার জনপ্রিয় ওসিলেটর।
• Stochastic Oscillator – আরেকটি ওসিলেটর, যা মার্কেটের গতি পরিমাপে ব্যবহৃত হয়।
• MACD – Moving Average Convergence Divergence, ট্রেন্ড রিভার্সাল চিহ্নিত করতে সহায়ক।
• Parabolic SAR – কোন পয়েন্টে ট্রেন্ড শেষ হতে পারে, তা বুঝতে সহায়ক।
• Momentum, CCI, ATR ইত্যাদিও যোগ করা যায়— ট্রেডাররা ইচ্ছেমতো ব্যবহার করতে পারেন।

সব ইন্ডিকেটরই কাস্টমাইজ করা যায়— পিরিয়ড, রং, লেভেল ইত্যাদি পরিবর্তনযোগ্য। ট্রেডাররা নিজেদের স্ট্র্যাটেজির সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে MA + RSI + Bollinger সহ একাধিক ইন্ডিকেটরের সমন্বয় করতে পারেন। পেশাদার সফটওয়্যার (যেমন, MetaTrader)ほど জটিল না হলেও, বাইনারি অপশনের জন্য Quotex-এর টেকনিক্যাল সুবিধা যথেষ্ট।

ইন্ডিকেটর ছাড়াও, ড্রয়িং টুল ব্যবহার করে চার্টে সাপোর্ট/রেজিস্ট্যান্স লাইন, ট্রেন্ড লাইন, রেকট্যাঙ্গেল (যেমন, একটি প্রাইস রেঞ্জ নির্ধারণ) অথবা ফিবোনাচ্চি লেভেল ইত্যাদি অঙ্কন করা যায়। যার ফলে প্ল্যাটফর্ম ছাড়াই বিভিন্ন প্যাটার্ন (ত্রিভুজ, ফ্ল্যাগ, হেড অ্যান্ড শোল্ডার, ডাবল টপ ইত্যাদি) চিনতে পারেন।

Quotex-এর সিগন্যাল

পূর্বে উল্লেখিত “Signals” সেকশনটি মূলত নতুনদের বা সরাসরি কোনো সংকেত খোঁজা ট্রেডারদের জন্য। এখানে সময় সময় রিয়েল-টাইমে সাজেশন দেয়— যেমন: EUR/USD – “Up” (মূল্য বৃদ্ধি) – ৫ মিনিটের মেয়াদ। ব্রোকারের দাবি, এগুলো বাজার বিশ্লেষণের ওপর ভিত্তি করে তৈরি (সম্ভবত বিভিন্ন ইন্ডিকেটর বা এলগরিদমের সমন্বয়)।

তবে, Quotex-এর সিগন্যালের দাবিকৃত সঠিকতার হার (৮৭% পর্যন্ত) নিয়ে যথেষ্ট সংশয় আছে। কারণ, প্রথমত ব্রোকার তাদের সিগন্যাল জেনারেশনের পদ্ধতি বিশদে জানায় না। দ্বিতীয়ত, কিছু বিশেষজ্ঞের মতে এগুলো হয়তো বিপণনমূলক প্রচেষ্টা হতে পারে, যা নতুনদের দ্রুত লাভের আশ্বাস দেয়। অভিজ্ঞ ট্রেডারদের অধিকাংশই এমন “ম্যাজিক সিগন্যাল”-এর ওপর অন্ধভাবে নির্ভর করতে মানা করেন।

স্বতন্ত্রভাবে করা এক পরীক্ষায় দেখা গেছে Quotex-এর সিগন্যাল মেনে চললে প্রায় ৪৫% সময় সাফল্য এসেছে— অর্থাৎ, মার্কেটিং দাবিকে (৮৭%) মেলাতে পারেনি, বরং সামগ্রিকভাবে ক্ষতির দিকে গিয়েছে। তাই, শেষ পর্যন্ত নিজের বিশ্লেষণকেই অগ্রাধিকার দেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়।

সুতরাং, Quotex-এর সিগন্যালকে একটি সহায়ক উপাদান হিসেবে দেখা ভাল, প্রধান কৌশল হিসেবে নয়। আপনি চাইলে নিজের বিশ্লেষণ ও সিগন্যাল মিলিয়ে দেখতে পারেন, তবে স্রেফ সিগন্যাল অনুসরণ করে ট্রেড করাটা ঝুঁকিপূর্ণ।

Quotex মোবাইল অ্যাপ

যারা স্মার্টফোনে ট্রেড করতে পছন্দ করেন, তাদের জন্য Quotex সম্পূর্ণ ফিচারযুক্ত মোবাইল অ্যাপ তৈরি করেছে। এটি অ্যান্ড্রয়েড প্ল্যাটফর্মে পাওয়া যায়, যেখানে প্রায় সব মূল ফাংশন অন্তর্ভুক্ত। গুগল প্লে-তে দেখা যায়, অ্যাপটি ১ কোটিরও বেশি বার ডাউনলোড হয়েছে, যা জনপ্রিয়তার প্রমাণ। ওয়েব প্ল্যাটফর্মের মতোই, লগইন করে আপনি অ্যাসেট তালিকা দেখতে পারেন, গ্রাফ দেখতে পারেন, ট্রেড ওপেন করার ইন্টারফেস আছে। বোতামগুলো টাচ-ফ্রেন্ডলি, আর ইন্টারনেট সংযোগ ভালো হলে অর্ডার এক্সিকিউশন দ্রুত হয়।

অ্যান্ড্রয়েডের জন্য Quotex অ্যাপ ফ্রি ডাউনলোড করা যায় গুগল প্লে থেকে। ব্রাউজার ভার্সনের সঙ্গে এটির মেলামেশা অনেকাংশেই এক। আপনি অ্যাসেট নির্বাচন করে এক্সপিরেশন টাইম ও পরিমাণ ঠিক করেন, গ্রাফ দেখে সিদ্ধান্ত নেন। অ্যাপে যা যা আছে:

• সব ট্রেডিং অ্যাসেট অ্যাক্সেস। কারেন্সি, ক্রিপ্টো, স্টক— সব একইভাবে পাওয়া যায়।
• লাইভ প্রাইস চার্ট। চাইলে পুরো স্ক্রিনে দেখা যায়; টাইমফ্রেম বদলানো বা কয়েকটি ইনডিকেটর যোগ করা যায়, তবে স্মার্টফোনের ছোট স্ক্রিনে সব কিছু একসঙ্গে দেখা একটু দুরূহ।
• টেকনিক্যাল ইন্ডিকেটর মোবাইলেও ব্যবহারের সুযোগ আছে (যেমন RSI, MA)। যদিও বিশদে ফাইন-টিউন কিছুটা অস্বস্তিকর হতে পারে, তবে মূল কাজ করা সম্ভব।
• ট্রেডিং সিগন্যাল ইন্টিগ্রেট করা। মোবাইল নোটিফিকেশন বা অ্যাপের মধ্যেই আপনাকে সিগন্যাল দেখায়।
• অ্যাকাউন্ট ম্যানেজমেন্ট: ডিপোজিট, উত্তোলন রিকোয়েস্ট, লেনদেনের ইতিহাস— সবকিছু অ্যাপ থেকেই করা যায়।
• বোনাস ও প্রোমোশন— প্রোমোকোড এন্ট্রি, টুর্নামেন্টে যোগদান ইত্যাদিও অ্যাপ থেকেই সম্ভব।
• ডেমো অ্যাকাউন্ট— অ্যাপেই এক ট্যাপে ডেমো ও রিয়েল অ্যাকাউন্টে সুইচ করা যায়, ফলে আপনি মোবাইল থেকেই প্রশিক্ষণ চালিয়ে যেতে পারেন।
• কাস্টমার সাপোর্ট— অ্যাপে থেকেই চ্যাট কিংবা ইমেলের মাধ্যমে সাপোর্টের সাথে যোগাযোগ করা যায়। ব্যবহারকারীদের মতে, অ্যাপ ছেড়ে না গিয়েই চ্যাটে সাড়া পাওয়া যায়।

মোবাইল ইন্টারফেস এমনভাবে তৈরি হয়েছে, যেন ছোট স্ক্রিনেও খুব একটা বিড়ম্বনা না হয়। ল্যান্ডস্কেপ মোডে চার্ট বড় করে দেখা যায়, আর পোর্ট্রেট মোডে দ্রুত ট্রেড প্লেস করার সুবিধা— উপরে গ্রাফ, নিচে ট্রেড কন্ট্রোল আর বড় “↑” “↓” বোতাম।

মোবাইল অ্যাপের সুবিধা

• যেকোনো জায়গা ও সময় ফোন থেকে ট্রেড করা যায়।
• পুশ নোটিফিকেশন বা আপডেটের মাধ্যমে সিগন্যাল মিস হওয়ার আশঙ্কা থাকে না।
• টাচ-স্ক্রিনের কথা মাথায় রেখে বড় বোতাম, কম এলোমেলো ডিজাইন— দ্রুত সিদ্ধান্ত নেওয়া সহজ।
• ডাউনলোড সংখ্যা ও রেটিং ইঙ্গিত করে এটি স্থিতিশীল ও কার্যকর।

অসুবিধা

• ছোট স্ক্রিনে বিস্তারিত চার্ট অ্যানালাইসিস কিছুটা কঠিন।
• অল্প সময়ে অনেক অ্যাসেট মনিটর করাও সহজ নয়— মোবাইলে সাধারণত ১-২টি ইন্সট্রুমেন্টে ফোকাস করাই ভালো।
• কিছু ইউজার জানান যে নিরাপত্তার স্বার্থে অ্যাপটি বেশি ফ্রিকোয়েন্টলি লগ আউট করিয়ে দেয়, বারবার লগইন করতে হয়।

সারকথা, Quotex মোবাইল অ্যাপ ট্রেডারদের চলতি পথে সক্রিয় থাকার সুযোগ দেয়। যারা দ্রুত মার্কেটে অংশগ্রহণ করতে চান, তাদের জন্য এ এক কার্যকর সমাধান। প্রতিদ্বন্দ্বী অন্যদের মতো Quotex-ও অ্যান্ড্রয়েড অ্যাপে আধুনিক ফিচার দিয়েছে, যাতে ট্রেড আরও সহজ হয়।

Quotex ট্রেডিং অ্যাকাউন্টের ধরন

ডিপোজিটের পরিমাণের ওপর ভিত্তি করে Quotex বিভিন্ন ধাপের অ্যাকাউন্ট অফার করে। এখানে তিনটি প্রধান স্তর— Standard, Pro, এবং VIP। নতুনদের জন্য স্ট্যান্ডার্ড যথেষ্ট, আর বড় পুঁজি নিয়ে ট্রেড করতে চাইলে উঁচু স্তরের সুবিধা পাওয়া যায়।

স্ট্যান্ডার্ড অ্যাকাউন্ট (Basic/Standard)

নিবন্ধনের পর সবার প্রথমে স্ট্যান্ডার্ড স্ট্যাটাস দেওয়া হয়। সর্বনিম্ন ডিপোজিট মাত্র ১০ ডলার। আপনি ১০ ডলার বা তার বেশি জমা দিলেই রিয়েল ফান্ড দিয়ে ট্রেড শুরু করতে পারবেন। এই অ্যাকাউন্টে রয়েছে প্ল্যাটফর্মের সব মৌলিক ফিচার— সব অ্যাসেট, স্ট্যান্ডার্ড পেআউট (৯৫% পর্যন্ত), ডেমো অ্যাকাউন্ট, প্রোমোশনে অংশগ্রহণ ইত্যাদি। বড় কোনো সীমাবদ্ধতা নেই— ইন্ডিকেটর, সিগন্যাল, মোবাইল অ্যাপ, সাপোর্ট সবই ব্যবহার করা যাবে। শুধু অতিরিক্ত কোনো বোনাস বা উচ্চ পেআউট স্ট্যান্ডার্ডে নেই, তাই এটি মূলত নতুন বা স্বল্প পুঁজির ট্রেডারদের জন্য।

প্রফেশনাল অ্যাকাউন্ট (Pro)

যারা আরো বেশি ট্রেড ভলিউম করেন, তাদের জন্য Pro স্তর। এর জন্য আপনার অ্যাকাউন্ট ব্যালান্স ৫,০০০ ডলারের বেশি হতে হবে— হোক সেটা একবারেই জমা বা ধাপে ধাপে বেড়ে ওঠা। Pro অ্যাকাউন্টে যা যা সুবিধা মেলে:

• উচ্চ পেআউট। স্ট্যান্ডার্ডের চেয়ে কয়েক শতাংশ বেশি রিটার্ন পেতে পারেন (যেমন, স্ট্যান্ডার্ডে ৮৫% হলে প্রো-তে ৮৮–৯০%)।
• অগ্রাধিকার সাপোর্ট। প্রো ব্যবহারকারীরা দ্রুত সাড়া পান, হয়তো আলাদা চ্যানেলে যোগাযোগ করতে পারেন।
• ব্যক্তিগত অ্যাকাউন্ট ম্যানেজার। তিনি প্ল্যাটফর্ম, প্রোমোশন, ভেরিফিকেশন ইত্যাদি প্রশ্নে সহায়তা করেন।
• দ্রুত উত্তোলন। প্রো ক্লায়েন্টদের উত্তোলন আগে প্রক্রিয়া করা হয়, সম্ভাব্য তাৎক্ষণিক স্থানান্তরের সুযোগ থাকে।

মূলত বৃহৎ মূলধন ও ঘন ঘন ট্রেড করা ব্যবহারকারীদের জন্য প্রো স্ট্যাটাস। বাড়তি কিছু সুযোগ-সুবিধার বিনিময়ে তারা ব্রোকারকে বেশি কমিশন জেনারেট করেন। ৫,০০০ ডলারের ব্যালান্স হওয়া মাত্রই প্রো স্ট্যাটাস পাওয়া যায়, কোনো বাড়তি ফর্মালিটি নেই। ব্যালান্স ৫,০০০ ডলারের নিচে নামলে হয়তো প্রো স্ট্যাটাস হারাতে পারেন— বিস্তারিত সাপোর্টে জেনে নেওয়া দরকার।

VIP অ্যাকাউন্ট

Quotex-এর সর্বোচ্চ স্তর হল VIP, যাদের অ্যাকাউন্টে ১০,০০০ ডলারের বেশি আছে। তারা সর্বোচ্চ বিশেষাধিকার পান:

• সর্বোচ্চ পেআউট। অনেক ক্ষেত্রে স্ট্যান্ডার্ড অপেক্ষা ৪% পর্যন্ত বেশি (যেমন ৯৫% → ৯৮%)।
• ব্যক্তিগত ম্যানেজার (প্রো-এর মতোই, তবে হয়তো আরো অভিজ্ঞ)।
• ২৪/৭ অগ্রাধিকার সাপোর্ট। ভিআইপি ব্যবহারকারীরা সর্বাগ্রে সেবা পান।
• শ্রেষ্ঠ গতিতে উত্তোলন (নিঃশুল্ক)। ভিআইপি রিকোয়েস্ট সর্বপ্রথম প্রক্রিয়া করা হয়, কখনও কখনও কয়েক ঘণ্টায় টাকা পেয়ে যান।
• এক্সক্লুসিভ প্রোমোশন ও বোনাস। ভিআইপি-দের জন্য বড় বোনাস, স্পেশাল প্রোমোকোড, বড় টুর্নামেন্টে আমন্ত্রণ ইত্যাদির সুযোগ থাকে।

ভিআইপি মূলত প্রফেশনাল-লেভেলের ট্রেডার বা বড় মূলধন মালিকদের জন্য। ১০,০০০ ডলার অনেকের কাছে বড় অঙ্ক হতে পারে, তাই স্বাভাবিকভাবেই ভিআইপি অ্যাকাউন্ট স্বল্প। তবে, এই সব ট্রেডারদের ধরে রাখতে ভালো কিছু সুবিধা দেয় ব্রোকার।

নিম্নে সংক্ষেপে Quotex-এর অ্যাকাউন্ট তুলনা:

• স্ট্যান্ডার্ড: ১০ ডলার থেকে ডিপোজিট। পেআউট সর্বোচ্চ ৯৫%। সাধারণ সাপোর্ট। আলাদা অ্যাকাউন্ট ম্যানেজার নেই। উত্তোলন ৫ দিন পর্যন্ত সময় নিতে পারে। ডিপোজিট বোনাস ~৩০%।
• প্রো: ৫,০০০ ডলারের বেশি ব্যালান্স। স্ট্যান্ডার্ডের চেয়ে বেশি পেআউট (কিছু শতাংশ)। অগ্রাধিকার সাপোর্ট। ব্যক্তিগত ম্যানেজার। দ্রুত উত্তোলন। উঁচু হারে বোনাস।
• ভিআইপি: ১০,০০০ ডলারের বেশি ব্যালান্স। সর্বোচ্চ পেআউট। সর্বোচ্চ পর্যায়ের সাপোর্ট। সিনিয়র ব্যক্তিগত ম্যানেজার। তাৎক্ষণিক/উচ্চ অগ্রাধিকার উত্তোলন, কোনো ফি ছাড়াই। এক্সক্লুসিভ বোনাস (৩৫% বা তার বেশি)।

Quotex ডেমো অ্যাকাউন্ট

নতুনদের শেখার জন্য ও দক্ষতা উন্নয়নের জন্য Quotex বিনামূল্যে ডেমো অ্যাকাউন্ট অফার করে, যেখানে ভার্চুয়াল ফান্ড থাকে। ঝুঁকি ছাড়াই প্ল্যাটফর্ম অনুশীলনের সুযোগ এটি বিশেষ করে শুরুয়াতি ট্রেডারদের জন্য অত্যন্ত কার্যকর।

ডেমো অ্যাকাউন্টের শর্তাবলী: সাইন আপ করার পর (বা এমনকি পুরোপুরি রেজিস্ট্রেশন শেষ হওয়ার আগেই) আপনি ১০,০০০ ডলারের ভার্চুয়াল ব্যালান্স সহ একটি অনুশীলন অ্যাকাউন্ট পাবেন। এখানে রিয়েল মার্কেটের মতোই ট্রেড করা যায়, কিন্তু সত্যিকারের টাকা ঝুঁকিতে থাকে না। ডেমো প্ল্যাটফর্ম ও রিয়েল প্ল্যাটফর্ম দেখতে এক— একই কোট, একই পেআউট, একই বিশ্লেষণী টুল। ফলে বাস্তব পরিস্থিতির মতোই স্ট্র্যাটেজি পরীক্ষা করা যায়।

শেখার সুযোগ: বিভিন্ন অ্যাসেট, বিভিন্ন সময়সীমা, বিভিন্ন ইন্ডিকেটর পরীক্ষামূলকভাবে ব্যবহার করা যায় বিনা ঝুঁকিতে। প্ল্যাটফর্মের বেসিক পরিচয় যেমন অর্ডার প্লেস করা, গ্রাফিক্যাল মুভমেন্ট ইত্যাদি বোঝার জন্য এটি দারুণ উপায়। এমনকি আপনি Quotex-এর সিগন্যালের কার্যকারিতা ডেমোতে পরীক্ষা করে দেখতে পারেন। আরেকটি বড় সুবিধা হল, আপনি চাইলে ভার্চুয়াল ব্যালান্স বারবার রিফ্রেশ করে নিতে পারেন। ১০,০০০ ডলার “শেষ” হয়ে গেলেও আবার রিফিল করা যাবে। তাই সময় ও ভার্চুয়াল তহবিলের কোনো সীমাবদ্ধতা নেই।

তবে, ডেমোকে সম্পূর্ণ গুরুত্ব না দিলে ভুল ট্রেডিং অভ্যাস জন্ম নিতে পারে। ভার্চুয়াল ফান্ডকে বাস্তব বলে ভেবে চালিয়ে যান, যাতে মানসিকভাবে সতর্ক থাকেন। কোন ট্রেড কেন লাভজনক বা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, তা খেয়াল রেখে একটা “ট্রেডিং জার্নাল” তৈরি করতে পারেন। এভাবে শিখন-প্রক্রিয়া অনেক গতিময় হবে।

Quotex বোনাস ও প্রোমোশন

নতুন গ্রাহক টানতে ও পুরনোদের সক্রিয় রাখতে Quotex বিভিন্ন বোনাস ও প্রোমোশনের ব্যবস্থা রেখেছে। বিপণন কৌশলে বোনাসের ভূমিকা এখানে উল্লেখযোগ্য। নিচে কয়েকটি প্রচলিত বোনাস ও শর্তাবলী উল্লেখ করা হল:

ওয়েলকাম ডিপোজিট বোনাস

নতুন ব্যবহারকারীরা প্রথম অ্যাকাউন্টে তহবিল জমা দিলে সাধারণত অতিরিক্ত বোনাস পান। সাধারণত ১০০ ডলারের ওপর ডিপোজিটে +৩০% বোনাস পাওয়া যায়। যেমন, ১০০ ডলার জমা দিলে ৩০ ডলার অতিরিক্ত যুক্ত হয়ে অ্যাকাউন্টে ১৩০ ডলার হবে। ৩০০ ডলার জমা দিলে ৯০ ডলার অতিরিক্ত যুক্ত হয়ে ৩৯০ ডলার। কখনো কখনো বিশেষ অফারে এই হার ৩০% এর বেশি হতে পারে। ব্রোকারের ভাষ্য মতে, বোনাস ফান্ড থেকে অর্জিত মুনাফা উত্তোলনের জন্য নির্দিষ্ট টার্নওভারের শর্ত পূরণ করতে হয় (নিচে দেখুন)।

VIP গ্রাহকরা আরও বড় বোনাস পেতে পারেন। ওয়েবসাইটে বলা আছে বড় অঙ্কের ডিপোজিটে ৩৫–৪০% পর্যন্ত বোনাস হতে পারে। এছাড়া প্রোমোকোডের মাধ্যমেও বোনাসের হার বাড়ানো সম্ভব: Quotex প্রায়ই কোড প্রকাশ করে, যেখানে ৫০% অথবা ১০০% পর্যন্ত বোনাস পাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। সাধারণত সোশ্যাল মিডিয়া, ইমেল ক্যাম্পেইন বা অ্যাফিলিয়েটদের মাধ্যমে এসব কোড শেয়ার করা হয়। আপনি ডিপোজিট করার সময় কোড দিলে সাথে সাথে বোনাস অ্যাকাউন্টে যোগ হয়। অবশ্য ১০০% বোনাসের ক্ষেত্রে টার্নওভার শর্ত বেশ কঠোর হতে পারে।

প্রোমোকোড ও ভাউচার

ওয়েলকাম বোনাস ছাড়াও বিভিন্ন উপলক্ষে (হলিডে, ইভেন্ট, পার্টনার ক্যাম্পেইন) বিদ্যমান গ্রাহকরা প্রোমোকোড পেতে পারেন। উদাহরণস্বরূপ, সীমিত সময়ের মধ্যে যে কোনো ডিপোজিটে +২০% বোনাস। ২০২৫ সালের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত পাওয়া তথ্যে দেখা গেছে ১০%, ৩০%, ৫০%, ১০০% প্রোমোকোড সক্রিয় আছে। ব্লগ বা রিভিউতেও সেগুলো মিলতে পারে। ফিল্ডে কোড পেস্ট করে শর্ত পূরণ করলেই বোনাস পাওয়া যায়।

টুর্নামেন্ট ও প্রতিযোগিতা

Quotex সময়ে সময়ে ট্রেডারদের জন্য বিভিন্ন টুর্নামেন্ট আয়োজন করে, যেখানে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে সর্বোচ্চ লাভ করা ব্যক্তিরা পুরস্কার পান— কখনো ডেমো অ্যাকাউন্টে, কখনো রিয়েল অ্যাকাউন্টে। বিজয়ীরা সাধারণত বোনাস ক্রেডিট বা নগদ পুরস্কার পেতে পারেন। এর ফলে ট্রেডাররা লাভজনক ফলাফল আনতে উদ্বুদ্ধ হন। উদাহরণস্বরূপ, দৈনিক টুর্নামেন্টে ১,০০০ ডলারের পুরস্কার তহবিল থাকে, যা শীর্ষ ১০ জনের মধ্যে বণ্টিত হয়। পুরস্কার প্রায়ই বোনাস ফান্ড আকারে (টার্নওভারের শর্ত যুক্ত) বা রিস্ক-ফ্রি ট্রেড রূপে দেওয়া হয়।

রিস্ক-ফ্রি ট্রেড

কিছু সময় ব্রোকাররা “রিস্ক-ফ্রি ট্রেড” দেয়, যেখানে ট্রেড হারলে মূল স্টেক ফেরত দেয়া হয়। Quotex VIP বা প্রমোশনালভাবে এই ধরনের সুবিধা দিতে পারে। যেমন, ১০ ডলারের ৩টি রিস্ক-ফ্রি ট্রেড যদি তিনটিই লসে যায়, ৩০ ডলার ফেরত পেতে পারেন। আর যদি লাভ হয়, লাভ আপনার হয়ে থাকবে। তবে সাধারণত ফেরতটি নগদ নয়, বোনাস ফান্ড আকারে আসে।

বোনাসের টার্নওভার শর্ত

মনে রাখতে হবে, Quotex-এর সকল বোনাসের সাথে উত্তোলন সীমাবদ্ধতা থাকে। বোনাস হাতে পেলেই তা সরাসরি তুলতে পারবেন না; প্রথমে নির্দিষ্ট পরিমাণ ট্রেড করতে হবে। ইউজার এগ্রিমেন্টে বলা আছে, বোনাস ফান্ড মূলত ট্রেডের জন্য ব্যবহার করতে হবে।

সাধারণত বোনাসের গুণফল হিসাবে একটা নির্দিষ্ট ভলিউম ট্রেড করতে হয় (অর্থাৎ “ওয়েজারিং” করতে হয়)। জানা যায়, Quotex-এ প্রায় x১০০-মানের টার্নওভার শর্ত প্রচলিত, অর্থাৎ ১০০ ডলার বোনাস পেলে বোনাসকে আসল অর্থে পরিণত করতে ১০,০০০ ডলারের মোট ট্রেড ভলিউম করতে হবে। এই ভলিউম কেবল লাভ নয়, সব ট্রেডের সম্পূর্ণ পরিমাণ বিবেচনা করে। ফলে স্রেফ একটা বড় লেনদেন যথেষ্ট নয়, আপনাকে অনেকবার ট্রেড করে বারবার ঐ অঙ্ক ছুঁতে হবে। যদি টার্নওভার পূরণের আগে টাকা তুলতে চান, তবে বোনাস বাতিল হয়ে যায়।

ভালো দিক হল, Quotex বোনাস বাতিলের সুযোগ রাখে। আপনি চাইলে ব্যক্তিগত অ্যাকাউন্ট থেকে বোনাস অপশন বন্ধ করে দিতে পারেন, যাতে টার্নওভার বাধ্যবাধকতা না থাকে। যদি আগে থেকেই বোনাসের অংশ ব্যবহার করে থাকেন, তাহলে বাতিল করলে সেই বোনাস-সম্পৃক্ত লাভও মুছে যেতে পারে। তাই বোনাস নিয়ে নিশ্চিত না হলে শুরুতেই বাতিল করুন।

বোনাস পলিসির সারসংক্ষেপ

• প্রথম ডিপোজিটে সাধারণত ~৩০% ওয়েলকাম বোনাস, যা প্রাথমিক ক্যাপিটাল বাড়িয়ে তোলে।
• প্রোমোকোডের মাধ্যমে বেশি বোনাস (৫০–১০০%) পাওয়ার সুযোগ বা পরবর্তী ডিপোজিটে বোনাস মিলতে পারে।
• বোনাস ফান্ড ট্রেডের পরিমাণ ও সম্ভাব্য লাভ বাড়ায়, কিন্তু থাকে কঠোর টার্নওভার শর্ত (x১০০ ইত্যাদি)।
• বোনাস সরাসরি তুলতে পারবেন না, বরং শর্ত পূরণের পর। বোনাসের মাধ্যমে অর্জিত লাভও শর্তাবদ্ধ থাকতে পারে।
• নিশ্চিত না থাকলে বোনাস গ্রহণ না করাই ভালো (শুধু নিজের মূলধন নিয়ে ট্রেড করুন)।
• ডিপোজিট বোনাস ছাড়াও টুর্নামেন্ট, রিস্ক-ফ্রি ট্রেড, VIP লয়্যালটি প্রোগ্রাম ইত্যাদি রয়েছে, যা ট্রেডারদের আরও সক্রিয় করে তুলতে চায়।

Quotex-এ ডিপোজিট ও উত্তোলন

Quotex-এ অর্থ জমা ও উত্তোলন পদ্ধতি খুবই নমনীয়— অনেকগুলো পেমেন্ট মেথড সাপোর্ট করে, এবং সর্বনিম্ন প্রয়োজনীয়তার পরিমাণও বেশ কম। নিচে দেখুন কিভাবে ডিপোজিট করবেন, কিভাবে উত্তোলন করবেন, এবং কী কী সমস্যার সম্মুখীন হতে পারেন।

Quotex-এ সর্বনিম্ন ডিপোজিট মাত্র ১০ ডলার, যা বাজারে অন্যতম সেরা কম প্রয়োজনীয়তা। নতুনরা সামান্য অর্থ দিয়ে প্ল্যাটফর্ম যাচাই করতে পারেন। একাউন্ট কারেন্সি সাধারণত ইউএসডি হিসেবে সেট করা হয় (যদিও ইউরো, পাউন্ড, রিয়াল ইত্যাদিতেও সম্ভব), আর একবারে ন্যূনতম ১ ডলারের ট্রেড করা যায়।

ডিপোজিট পদ্ধতি

Quotex বিভিন্ন দেশের ব্যবহারকারীদের জন্য বিভিন্ন পেমেন্ট অপশন অফার করে:

• ব্যাংক কার্ড: ভিসা, মাস্টারকার্ড— সবচেয়ে সাধারণ উপায়। সাধারণত তাৎক্ষণিক সম্পন্ন হয়।
• ই-ওয়ালেট: Skrill, Neteller সহ অন্যান্য স্থানীয় ওয়ালেট (যেমন পারফেক্ট মানি, AdvCash, Piastrix ইত্যাদি)।
• ক্রিপ্টোকারেন্সি: বিটকয়েন, ইথেরিয়াম, লাইটকয়েন, Tether (USDT) ইত্যাদি সাপোর্ট করে। একটা ঠিকানা পাওয়া যায়, সেখানে ক্রিপ্টো পাঠালে নেটওয়ার্ক কনফার্মেশন শেষেই ব্যালান্স আপডেট হয়। অনেকের কাছে এটি সহজলভ্য ও বৈশ্বিকভাবে ব্যবহারযোগ্য।
• ব্যাংক ওয়্যার ট্রান্সফার: বড় পরিমাণ অর্থ জমা দিতে (SWIFT/SEPA) সময় লাগে কয়েকদিন, ব্যাংকের ফিও থাকতে পারে।
• স্থানীয় বিকল্প: কিছু অঞ্চলে স্থানীয় ব্যাঙ্কিং পদ্ধতি বা পেমেন্ট গেটওয়ে যুক্ত থাকে (যেমন এশিয়ায় অনলাইন ব্যাংক ট্রান্সফার, লাতিন আমেরিকায় Boleto, ভারতে UPI ইত্যাদি)।

উত্তোলন

ডিপোজিটের মতোই উত্তোলন পদ্ধতিও সাধারণত একই— মানি লন্ডারিং রুখতে সাধারণত যে পদ্ধতিতে ডিপোজিট করেছিলেন, সেই পদ্ধতিতেই উত্তোলন করতে হয়। আপনি যদি ভিসা কার্ড দিয়ে জমা করে থাকেন, তাহলে উত্তোলনের নির্দিষ্ট পরিমাণ কার্ডে ফেরত যায় (মূল ডিপোজিট পর্যন্ত)। অতিরিক্ত লাভ অন্য কোনো পদ্ধতিতে আসতে পারে পলিসি অনুসারে। Skrill ব্যবহার করলে একই Skrill একাউন্টে তুলতে হবে।

উত্তোলনের প্রক্রিয়াকরণ সময়

Quotex-এর FAQ অনুযায়ী, উত্তোলন অনুরোধ ১ থেকে ৫ কর্মদিবসের মধ্যে নিষ্পন্ন হয়। বাস্তবে ছোট অঙ্ক (নির্দিষ্ট সীমার নিচে) দ্রুত— কখনো ঘণ্টা কয়েক বা ১ দিনের মধ্যেও— হয়ে যেতে পারে। অফিসিয়ালভাবে ৫ দিন সময় রাখে। অনেক অফশোর ব্রোকারের ক্ষেত্রেই এটাই সাধারণ। যেহেতু ব্যাংক বা পেমেন্ট গেটওয়ে নিজস্ব সময় নেয়, তাই পুরো প্রক্রিয়া কখনো একটু বাড়তে পারে।

VIP গ্রাহকরা তুলনামূলক দ্রুত পান— মাঝে মাঝে ঘণ্টা মধ্যেই, আর সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার পান। সাধারণ ক্লায়েন্টদের ক্ষেত্রে কয়েক দিনের অপেক্ষা স্বাভাবিক। ৫ কর্মদিবস পেরিয়েও টাকা না পেলে সাপোর্টে যোগাযোগ করে বিস্তারিত জানাতে হবে।

সম্ভাব্য উত্তোলন সমস্যাগুলো ও সমাধান

• যদি কোনো কার্ডে আপনার মূল জমার চেয়ে বেশি অর্থ তুলতে চান, বাড়তি অংশ অন্য পদ্ধতিতে পাঠানো হতে পারে (কার্ড কোম্পানিগুলো সাধারণত ডিপোজিটের সমান টাকার বেশি রিফান্ড রিসিভ করতে দেয় না)।
• কোনো পেমেন্ট যদি ব্যাঙ্কের তরফে বাতিল হয় (যেমন, আপনার ব্যাঙ্ক বাইনারি অপশন ব্রোকারের লেনদেন গ্রহণ করছে না), তাহলে বিকল্প অন্য কোনো ই-ওয়ালেট বা ক্রিপ্টো ব্যবহার করতে হতে পারে।
• Quotex কোনো সন্দেহজনক লেনদেন দেখলে বাড়তি পরিচয় যাচাই (যেমন, পরিচয়পত্র হাতে সেলফি) চাইতে পারে, বিশেষ করে বড় অঙ্কের ক্ষেত্রে।
• ৫ দিনের বেশি দেরি হলে, পেমেন্টের ট্র্যাকিং রেফারেন্স (ARN কোড কিংবা SWIFT বিবরণ) দাবি করুন। তা দিয়ে ব্যাংকে আটকে যাওয়া লেনদেন খোঁজা সহজ হয়।

একটি বুদ্ধিদীপ্ত উপায় হল: বড় অঙ্ক জমে রাখার বদলে নিয়মিত অল্প অল্প করে লাভ উত্তোলন করা। যেহেতু ব্রোকার অফশোর, তাই সম্ভাব্য ঝুঁকি কমাতে নিয়মিত আংশিক প্রফিট নেওয়াই ভালো। বড় অঙ্ক একবারে তোলার চেয়ে কয়েকবারে ছোট ছোট করে তোলা অনেক নিরাপদ।

Quotex-এ কীভাবে ট্রেড করবেন (ধাপ-ধাপে গাইড)

বাইনারি অপশন ট্রেডিংয়ের পদ্ধতি Quotex-এ বেশ সহজ। নিচে নতুনদের জন্য ধাপে ধাপে নির্দেশিকা দেওয়া হল— নিবন্ধন থেকে প্রথম ট্রেড পর্যন্ত:

ধাপ ১. অ্যাকাউন্ট তৈরি করুন

Quotex-এর অফিসিয়াল সাইট-এ গিয়ে “Sign up” ক্লিক করুন। ইমেল, পাসওয়ার্ড দিন ও অ্যাকাউন্ট কারেন্সি (USD, EUR ইত্যাদি) বেছে নিন— সাধারণত USD নেওয়া হয়। প্রোমোকোড থাকলে তাও যোগ করতে পারেন। শর্তাবলী মেনে নিয়ে নিবন্ধন সম্পন্ন করুন। চাইলে গুগল, ফেসবুকের মতো সোশ্যাল মিডিয়া দিয়েও লগইন করা যায়। এরপর ইমেলে একটি কনফার্মেশন লিংক আসবে— সেখানে ক্লিক করে অ্যাকাউন্ট সক্রিয় করুন।

ধাপ ২. ডেমো মোড চেষ্টা করুন (ঐচ্ছিক)

নিবন্ধনের পর প্ল্যাটফর্ম আপনাকে ডেমো অ্যাকাউন্টে শুরু করতে বলতে পারে। ১০,০০০ ডলারের ভার্চুয়াল ফান্ড দিয়ে প্রাথমিকভাবে সব শিখে নেওয়া উত্তম। উপরের প্যানেলে দেখুন “Demo Account” সিলেক্ট করা আছে কি না। কয়েকটি ট্রেড ওপেন করে দেখুন, কিভাবে সময় ও পরিমাণ ঠিক করবেন। যখন আত্মবিশ্বাসী হবেন, রিয়েল ট্রেডিংয়ে যেতে পারেন।

ধাপ ৩. অ্যাকাউন্টে ফান্ড যোগ করুন

রিয়েল মানি দিয়ে ট্রেড করতে হলে প্রথমে ডিপোজিট করতে হবে। “Deposit” বোতামে ক্লিক করুন (নাম ভিন্ন হতে পারে তবে বোতামটি স্পষ্ট দেখবেন)। পছন্দের পেমেন্ট পদ্ধতি বেছে নিন (যেমন ব্যাংক কার্ড)। ডিপোজিটের পরিমাণ (সর্বনিম্ন ১০ ডলার) লিখুন, প্রোমোকোড থাকলে যুক্ত করুন। এরপর পর্দায় নির্দেশ মতো কার্ড নম্বর, মেয়াদ, CVV দেবেন অথবা ই-ওয়ালেট হলে লগইন করে কনফার্ম করবেন; ক্রিপ্টো হলে প্রদত্ত ঠিকানায় টাকা পাঠাবেন ইত্যাদি। সাধারণত ডিপোজিট সঙ্গে সঙ্গে যুক্ত হয়ে যায়। তারপর অ্যাকাউন্ট ব্যালান্স (এবং বোনাস) দেখতে পাবেন। এবার অ্যাকাউন্ট প্যানেলে “Real Account” সিলেক্ট করে রিয়েল ট্রেডিং শুরু করুন।

ধাপ ৪. অ্যাসেট নির্বাচন করুন

কোন মার্কেটে ট্রেড করতে চান ঠিক করুন। উপরে বা পাশে অ্যাসেট তালিকা পাবেন, যা “কারেন্সি,” “ক্রিপ্টো,” “কমোডিটি,” “ইনডেক্স” ইত্যাদি বিভাগে ভাগ করা থাকে। একটা অ্যাসেট ক্লিক করলে (যেমন EUR/USD) তার লাইভ চার্ট মাঝখানে দেখাবে। দেখুন দাম আপডেট হচ্ছে কি না। চাইলে একাধিক অ্যাসেট আলাদা ট্যাবে খুলে রাখতে পারেন, তবে শুরুতে একটি অ্যাসেটেই মনোযোগ দিন।

ধাপ ৫. ট্রেড কনফিগার করুন

ডান পাশে অর্ডার প্যানেল রয়েছে:

• ট্রেডের পরিমাণ: কত ডলার নিয়ে ট্রেড করবেন লিখুন। সর্বনিম্ন ১ ডলার। নবীনরা ছোট অঙ্কে শুরু করাই নিরাপদ।
• এক্সপিরেশন টাইম: কখন অপশন শেষ হবে ঠিক করুন। Quotex সর্বনিম্ন ৬০ সেকেন্ড, ২ মিনিট ইত্যাদি থেকে ৫, ১৫ মিনিট, ১ ঘণ্টা বা দিনের শেষ পর্যন্ত সমর্থন করে। সময়ের ফিল্ডে ক্লিক করে তালিকা থেকে বেছে নিন বা নিজে সেট করুন।
• লাভের হার (প্রফিট শতাংশ): পরিমাণের কাছে দেখাবে— যেমন ৯০% হলে সাকসেসফুল হলে ১ ডলারে ১.৯ ডলার ফেরত পাবেন (০.৯ ডলার লাভ)।

ধাপ ৬. চার্ট বিশ্লেষণ করুন

অর্ডার বোতাম চাপার আগে কিছু বিশ্লেষণ করুন: মার্কেট আপট্রেন্ড নাকি ডাউনট্রেন্ড? সাপোর্ট/রেজিস্ট্যান্স কি আছে? RSI-এর মতো ইন্ডিকেটর দেখে ওভারবট/ওভারসোল্ড অবস্থা দেখতে পারেন। ব্যক্তিগত স্ট্র্যাটেজি থাকলে সেই অনুযায়ী শর্ত মিললে ট্রেড করুন। গুরুত্বপূর্ণ কোনো খবর চলছে কি না, অর্থনৈতিক ক্যালেন্ডার দেখে নিন। ৫ মিনিটের অপশন হলেও যুক্তিসঙ্গত কারণ থাকা ভালো।

ধাপ ৭. দিক নির্বাচন – কল (Call) বা পুট (Put)

এটাই মূল সিদ্ধান্ত— দাম কি বাড়বে না কমবে? Quotex সাধারণত দুটি বড় বোতাম দেখায়: সবুজ “↑” (Buy/Up/Call) আর লাল “↓” (Sell/Down/Put)। যদি মনে করেন দাম বাড়বে, “Up” টিপুন; কমবে মনে করলে “Down” টিপুন। ক্লিক করলে সঙ্গে সঙ্গেই ট্রেড ওপেন হয়ে যাবে। চার্টে আপনার এন্ট্রি পয়েন্ট আর এক্সপিরেশন সময়ের লাইন ফুটে উঠবে।

ধাপ ৮. ফলাফলের জন্য অপেক্ষা

এবার এক্সপিরেশন পর্যন্ত অপেক্ষা। আপনি চাইলে লাইভ চার্ট দেখতেই পারেন, দাম ওঠানামা দেখতে। কেউ কেউ স্নায়ুচাপ এড়াতে তাকান না। যাই হোক, চূড়ান্ত ফলাফল নির্ধারিত হয় ঠিক এক্সপিরেশন মুহূর্তে।

ধাপ ৯. অপশন ক্লোজ ও লাভ/ক্ষতি গণনা

এক্সপিরেশন সময় হলে ট্রেড স্বয়ংক্রিয়ভাবে বন্ধ হবে। যদি আপনার পূর্বাভাস সঠিক হয়, তাহলে মূল অর্থসহ লাভ অ্যাকাউন্টে জমা হবে। ভুল হলে স্টেক হারাবেন। “History” ট্যাবে সব ট্রেডের রেকর্ড দেখতে পারবেন— কোন দিকে কীভাবে ট্রেড করেছিলেন আর ফলাফল কী হয়েছে।

ধাপ ১০. বিশ্লেষণ ও পুনরাবৃত্তি

প্রতি ট্রেডের পর (লাভ বা ক্ষতি যাই হোক) পরীক্ষা করুন: কেন লাভ হলো বা লোকসান হলো? স্রেফ ভাগ্য, নাকি বাস্তব বিশ্লেষণ? ক্ষতি হলে হয়তো বাজার অন্যভাবে আচরণ করেছে, অথবা আপনার পূর্বাভাস ভুল ছিল। সেখান থেকে শিক্ষা নিয়ে স্ট্র্যাটেজি উন্নত করুন।

Quotex-এ কার্যকর ট্রেডিংয়ের জন্য কিছু টিপস:

• শুরুতে ডেমো বা ছোট পরিমাণে রিয়েল মানি ব্যবহার করুন। বড় বিনিয়োগ করতে তাড়াহুড়ো করবেন না।
• কৌশল বা স্ট্র্যাটেজি ব্যবহার করুন। বাইনারি অপশনকে রুলেটের মতো ভাবলে ভুল করবেন। অন্তত মৌলিক টেকনিক্যাল/ফান্ডামেন্টাল বিশ্লেষণ করুন।
• ভাবাবেগ নিয়ন্ত্রণ করুন। জিতে গেলেই অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাসী হবেন না, আর হারলে দ্রুত প্রতিশোধ নেওয়ার চেষ্টা ভুলে যান।
• মানি ম্যানেজমেন্ট প্রয়োগ করুন। প্রতিটি ট্রেডে ১–৫% এর বেশি ঝুঁকি নেবেন না।
• প্ল্যাটফর্মের টুল ব্যবহার করুন। ইন্ডিকেটর ও সিগন্যাল উপযোগী হতে পারে, তবে কেবল সিগন্যালের ওপরই নির্ভর করবেন না।
• আগ্রাসী মার্টিঙ্গেল এড়িয়ে চলুন। টানা দ্বিগুণ করায় বড় ক্ষতির ঝুঁকি থাকে।

উপরের গাইড অনুসরণ করলে Quotex প্ল্যাটফর্মে স্বাচ্ছন্দ্যে বাইনারি অপশন ট্রেড করতে পারবেন। ইন্টারফেস সহজ, আর ট্রেড বসাতে কয়েকটি ক্লিকই যথেষ্ট। কিন্তু সাফল্যের চাবিকাঠি হল নিয়মানুবর্তিতা ও যুক্তিভিত্তিক সিদ্ধান্ত। সঠিকভাবে বিশ্লেষণ ও শেখার মনোভাব থাকলে Quotex-এ ট্রেডিং লাভজনক হতে পারে।

Quotex-এর সুবিধা ও অসুবিধা

যেকোনো ব্রোকারের মতোই Quotex-এরও কিছু শক্তিশালী দিক এবং কিছু দুর্বলতা আছে। নিচে প্ল্যাটফর্মের সুদৃঢ় বৈশিষ্ট্য ও সম্ভাব্য অসুবিধা উল্লেখ করা হল:

সুবিধা

• স্বল্প এন্ট্রি ব্যারিয়ার: মাত্র ১০ ডলার ডিপোজিট, ১ ডলারের ট্রেড। যে কেউ সহজে শুরু করতে পারেন।
• উচ্চ পেআউট রেট: সফল ট্রেডে ৯৫% পর্যন্ত লাভ, যা অনেক ব্রোকারের চেয়ে বেশি।
• ব্যবহারবান্ধব ট্রেডিং প্ল্যাটফর্ম: মিনিমালিস্টিক, স্পষ্ট ডিজাইন, দ্রুত কাজ করে, বহু ভাষা সাপোর্ট করে।
• অন্তর্নির্মিত ট্রেডিং সিগন্যাল: ৮৭% সফলতার দাবি, যদিও বাস্তবিক ফলাফল ভিন্ন হতে পারে।
• ফ্রি $১০,০০০ ডেমো অ্যাকাউন্ট: সময়সীমাহীন ও যেকোনো সময় রিফিলযোগ্য, যা ঝুঁকি ছাড়াই অভ্যাসের সুযোগ দেয়।
• মোবাইল অ্যাপ: অ্যান্ড্রয়েডে (এবং কিছু অঞ্চলে iOS-এ) সহজে ব্যবহারযোগ্য; ১ কোটিরও বেশি ডাউনলোড হয়েছে।
• বিচিত্র অ্যাসেট: প্রায় ১৫০টিরও বেশি ইন্সট্রুমেন্ট (কারেন্সি, ইকুইটি, ক্রিপ্টো, কমোডিটি ইত্যাদি)।
• বোনাস ও প্রোমোশন: ওয়েলকাম বোনাস ~৩০%, প্রোমোকোড ~১০০%, টুর্নামেন্ট, রিস্ক-ফ্রি ট্রেড ইত্যাদি।
• বহুমুখী পেমেন্ট পদ্ধতি: কার্ড, ই-ওয়ালেট, ক্রিপ্টো, স্থানীয় গেটওয়ে ইত্যাদি; সাধারণত ব্রোকারের পক্ষ থেকে আলাদা ফি নেই।
• দ্রুত সাপোর্ট: ২৪/৭ সেবার দাবি, লাইভ চ্যাট ও ইমেল। VIP-দের ব্যক্তিগত ম্যানেজার।
• সহজ নিবন্ধন: এক মিনিটে অ্যাকাউন্ট তৈরি করা যায়, ডকুমেন্ট ভেরিফিকেশনও বেশ দ্রুত।
• শিক্ষামূলক রিসোর্স: FAQ, ব্লগ, ইউটিউবে পার্টনারদের ভিডিও— নতুনদের জন্য সহায়ক।
• কোনো অতিরিক্ত ট্রেডিং কমিশন নেই: ব্রোকার তাদের payout structure থেকেই আয় করে, স্প্রেড বা আলাদা ফি আরোপিত হয় না।

অসুবিধা

• লাইসেন্স বা নিয়ন্ত্রণের অভাব: অফশোর ব্রোকার হিসাবে গ্রাহকদের অর্থের ওপর কঠোর সুরক্ষা নেই।
• বিভিন্ন রেগুলেটরি সতর্কবার্তা: ইতালি, স্পেন, পর্তুগাল, ভারত Quotex-কে অবৈধ ঘোষণা করেছে।
• আক্রমণাত্মক বিপণন ও উচ্চ দাবি: সিগন্যালের সঠিকতা নিয়ে বর্ধিত প্রতিশ্রুতি, বাস্তবে যাচাই কঠিন।
• বাইনারি অপশন স্বয়ং উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ: অনেকেই টাকা হারায়।
• কিছু অঞ্চলে সীমাবদ্ধতা: যেমন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে অফিসিয়ালভাবে কাজ করে না, অন্যান্য জায়গাতেও নিষেধাজ্ঞা থাকতে পারে।
• শুধু বাইনারি অপশন: কোনো CFD, সরাসরি মার্জিন ফরেক্স বা দীর্ঘমেয়াদি বিনিয়োগ পণ্য নেই।
• ডেস্কটপ টার্মিনাল নেই: শুধু ওয়েব বা মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে ট্রেড করা যায়।
• সীমিত সাপোর্ট চ্যানেল: সরাসরি ফোন লাইন নেই, জটিল বিষয়ে সমাধান পেতে ইমেলের ওপর নির্ভর করতে হতে পারে।
• নতুন কোম্পানি (২০১৯ থেকে): দীর্ঘমেয়াদি রেকর্ড নেই, কোনো কারণে হঠাৎ বন্ধ হয়ে যাওয়ার ঝুঁকি থাকতে পারে।
• ভারী অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং: প্রচুর প্রচারণা ও রেফারাল রিভিউ থাকার ফলে নিরপেক্ষ মতামত খুঁজে পাওয়া কঠিন।

সার্বিকভাবে, Quotex-এর ট্রেডিং পরিবেশ (প্ল্যাটফর্ম, লাভের হার, বোনাস) আকর্ষণীয় হলেও, এটি অফশোর ও আনিয়ন্ত্রিত হওয়ার কারণে সম্ভাব্য বিলম্ব বা উত্তোলন সংক্রান্ত সমস্যায় পড়ার সম্ভাবনা থাকে। সে কারণে ট্রেডারদের সঙ্গত সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত: বড় পরিমাণ না রাখা, নিয়মিত লাভ উত্তোলন করা এবং বড়সড় “সহজ আয়ের” ফাঁদে পা না দেওয়া। ঝুঁকি সম্পর্কে সচেতন থাকলে আপনার সুরক্ষা বাড়ে।

Quotex বনাম প্রতিদ্বন্দ্বী: IQ Option, Binomo, এবং Pocket Option

Quotex-এর অবস্থান বুঝতে সেটিকে অন্যান্য পরিচিত বাইনারি অপশন ব্রোকারের সঙ্গে তুলনা করলে সুবিধা হয়। নিচে Quotex, IQ Option, Binomo, এবং Pocket Option-এর গুরুত্বপূর্ণ দিকগুলি (নিয়ন্ত্রণ, সর্বোচ্চ পেআউট, ন্যূনতম ডিপোজিট, বোনাস, মোবাইল অ্যাপ) তুলনা করা হল:

যদি আপনার লক্ষ্য আইনগত নজরদারির নিরাপত্তা হয়, তবে IQ Option বা অন্য কোনো নিয়ন্ত্রিত প্ল্যাটফর্ম বেছে নেওয়া ভালো, যদিও সেখানে বোনাস তুলনামূলকভাবে কম। আর যদি বড় বোনাস ও উচ্চ পেআউট চেয়ে থাকেন, Quotex Pocket Option-এর সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারে। Binomo পেআউট তুলনামূলক কম দিলেও, এটি FinaCom দ্বারা স্বীকৃত একটি পরিচিত ব্র্যান্ড, যা কিছুটা আত্মবিশ্বাস জোগায়।

পরিশেষে, পছন্দ নির্ভর করে আপনার ব্যক্তিগত স্বাচ্ছন্দ্য ও ইন্টারফেস পছন্দের ওপর। কারও কাছে IQ Option-এর ফিচার সম্পদ বেশি আকর্ষণীয় লাগে, আবার কেউ Quotex-এর সরলতা পছন্দ করেন। এই চারটি ব্রোকারই বাজারে জনপ্রিয়, তবে সবার শর্ত ও বৈশিষ্ট্য ভিন্ন।

সিদ্ধান্ত

Quotex একাধারে ইতিবাচক ও বিতর্কিত প্ল্যাটফর্ম— একদিকে আধুনিক, ব্যবহার-সহজ একটি বাইনারি অপশন ব্রোকার যার টুল ও উচ্চ পেআউট বেশ লোভনীয়; অন্যদিকে অফশোর ও অনিয়ন্ত্রিত হওয়ায় এর বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যায়। সার্বিক বিশ্লেষণে কিছু তথ্য সামনে আসে:

কে Quotex ব্যবহার করবেন? মূলত তারা যারা স্বল্প পুঁজিতে বা সহজ কোনো উপায়ে ট্রেডিং অনুশীলন করতে চান। ১০ ডলারের মতো ছোট আমানতে শুরু করে, ডেমো অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে আলাদা খরচ ছাড়া ট্রেনিং নেয়ার সুবিধা আছে। পাশাপাশি, পর্যাপ্ত ইন্ডিকেটর, বোনাস ফান্ড, এমনকি স্বয়ংক্রিয় সিগন্যাল সংযুক্ত আছে। নতুনেরা মনে করেন ইন্টারফেসটি সহজলভ্য, এন্ট্রি বাধাও কম। এশিয়া বা সিআইএস অঞ্চলে উচ্চ পেআউট ও বোনাসের কারণে অভিজ্ঞ ট্রেডাররাও আকৃষ্ট হন। তবে বড় বিনিয়োগ বা পেশাদার মানের নিরাপত্তা খোঁজা ট্রেডারদের জন্য সরকারের নিয়ন্ত্রণহীন প্ল্যাটফর্ম ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে।

Quotex-এর মূল শক্তি হল ব্যবহারিক সুবিধা ও সম্ভবত উচ্চ লাভজনকতা। খুব দ্রুত সব অ্যাসেট পেয়ে যান, টেকনিক্যাল অ্যানালাইসিস টুল ও সিগন্যাল একই প্ল্যাটফর্মে, পেআউট শতকরা ৮০–৯৫%। বিভিন্ন বোনাস ও প্রোমোশনে আপনার ক্যাপিটাল বৃদ্ধির সম্ভাবনা থাকে। এমনকি মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমেও যেকোনো জায়গায় ট্রেড করতে পারেন। অর্থাৎ, বাইনারি অপশনের প্রয়োজনীয় প্রায় সবকিছুই আছে এখানে।

তবে, দুর্বলতাগুলোও গুরুত্বপূর্ণ। সবচেয়ে বড় উদ্বেগ হল তহবিলের নিরাপত্তা। কোনো স্বীকৃত লাইসেন্স বা নিরীক্ষা নেই বলে আর্থিক সুরক্ষা খুবই প্রশ্নবিদ্ধ। অনেকেই উত্তোলন নিয়ে অভিযোগ বা অ্যাকাউন্ট ব্লক হওয়ার কথা বলেন, এবং বিভিন্ন দেশে প্ল্যাটফর্মটি অবৈধ ঘোষণা করা হয়েছে। সেইসাথে আগ্রাসী বিপণন, “গ্যারান্টিযুক্ত লাভ” ইত্যাদি দাবি সন্দেহের অবকাশ বাড়ায়।

সারকথায়, Quotex স্বল্পমেয়াদে ও তুলনামূলক কম মূলধনে উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ স্পেকুলেশনের জন্য উপযোগী হতে পারে। ঝুঁকি উচ্চ হলেও দ্রুত ফল পেতে চাইলে ট্রেডাররা এখানে সুযোগ দেখতে পারেন। অন্যদিকে, যারা স্থিতিশীলতা, স্বচ্ছতা ও আইনি গ্যারান্টি চান, তাদের জন্য এটি সঠিক স্থান নাও হতে পারে।

Igor Lementov - trading-everyday.com এ আর্থিক বিশেষজ্ঞ ও বিশ্লেষক