প্রধান পাতা সাইটের খবর
নতুন ট্রেডারদের জন্য ২০টি বিশেষজ্ঞ পরামর্শ (2025)
Updated: 29.04.2025

নতুনদের জন্য বিশেষজ্ঞ পরামর্শ: বাইনারি অপশন ট্রেডারদের ২০টি জরুরি টিপস (2025)

এই আর্টিকেলে আমরা কিছু সহজ কিন্তু অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শ দেখবো, যা অভিজ্ঞ ট্রেডাররা দিয়ে থাকেন। এগুলো নতুন ট্রেডারদের প্রাথমিক পর্যায়ে কিছু গুরুতর ভুল থেকে রক্ষা করতে সহায়তা করবে।

সূচিপত্র

তাড়াহুড়ো করে ট্রেড করবেন না

ট্রেডে ঝাঁপিয়ে পড়বেন না—বাজার গতকালও ছিল, আজও আছে, কালও থাকবে! বাজার পালাবে না। বরং প্রথমে আপনার জ্ঞানভিত্তিক ভিত্তি মজবুত করুন, যা ভবিষ্যতে যেকোনো দিকে বিকশিত করার সুযোগ দেবে।

শুধুমাত্র বোকা আর অতিমাত্রায় ঝুঁকি নেওয়া ট্রেডাররাই তাড়াহুড়ো করে। অভিজ্ঞ ট্রেডারের কাছে ট্রেডিং হল একটি কাজ, যেখানে বড় ঝুঁকি থাকে। বুদ্ধি খাটিয়ে এগোলেই কেবল বড় সাফল্য মিলতে পারে।

বাণিজ্য করতে ছুটে যাবেন না

যদি আপনি একজন নতুন ট্রেডার হন, তাহলে জ্ঞান অর্জনে সময় দিন। জ্ঞান কখনোই বেশি নয়, আর এটাই আপনার প্রধান হাতিয়ার। আপনি কত দ্রুত সফল হবেন এবং শেষমেশ কত আয় করবেন, তার বড় অংশ নির্ভর করে এই জ্ঞানের ওপর।

ট্রেডিং একটি পেশা, যা অনেকের কাছেই বেশ কঠিন। এটি আপনাকে আর্থিক স্বাধীনতা এনে দিতে পারে, তবে শেখার পথ দীর্ঘ। দ্বিতীয় সপ্তাহেই নিজেকে ‘গুরু’ ভাববেন না। কারও কারও কয়েক বছর লেগে যায়, তারপরও শেখার প্রক্রিয়া চলতেই থাকে।

নিজের বিচার-বুদ্ধি ব্যবহার করে ট্রেড করুন

সবসময় নিজের পরিকল্পনা ও বিশ্লেষণের ওপর আস্থা রাখুন। সবকিছু আপনার দায়িত্বে হবে। কখনো ব্যবহার করবেন না:
  • ট্রাস্ট ম্যানেজমেন্ট
  • সন্দেহজনক PAMM অ্যাকাউন্ট
  • ট্রেডিং সিগন্যাল
৯৯.৯৯% ক্ষেত্রে এভাবে টাকা খোয়ানোর সম্ভাবনা বেশি। অন্যদিকে, যদি নিজেই ট্রেড করেন ও ঝুঁকি নেন, তবে আপনার অভিজ্ঞতা বাড়বে। এটা আপনাকে ভবিষ্যতে ভুল এড়াতে ও আয়ের নতুন মাত্রায় পৌঁছাতে সাহায্য করবে।

বিভিন্ন ব্রোকারের ম্যানেজারদের আশ্বাস দেওয়া “ট্রাস্ট ম্যানেজমেন্ট” থেকেও দূরে থাকুন। ব্রোকার তো আপনার লস থেকে আয় করে, সেক্ষেত্রে তাদের ম্যানেজার কেনই বা আপনাকে লাভজনকভাবে সাহায্য করবেন?!

একসময় বিভিন্ন ব্রোকারের ম্যানেজাররা আমাকে ফোন করে “অলৌকিক” ট্রেডিং পদ্ধতির কথা বলত। কিন্তু আমি যখনি একটা প্রশ্ন করতাম—“এত দারুণ পদ্ধতি থাকলে আপনি নিজে কোটি টাকার মালিক না হয়ে ২০০-৪০০ ডলার বেতনের জব করছেন কেন?”—তখন তারা ফোন কেটে দিতো।

ট্রেডের সব ঝুঁকিই আপনার ওপর। আজকাল সবাই আপনার কাছ থেকে টাকা নেওয়ার চেষ্টা করবে। যদি আপনি ‘দ্রুত বড়লোক’ হওয়ার ফাঁদে পা দেন, দায় কিন্তু আপনারই। ‘দ্রুত আয়’ বলে আদতে কিছু নেই।

ট্রেডিং অভিজ্ঞতা না থাকলে ডেমো অ্যাকাউন্টে ট্রেডিং

আমিসহ বেশিরভাগ অভিজ্ঞ ট্রেডার মনে করেন, ডেমো অ্যাকাউন্ট সাময়িক উপকারের তুলনায় ক্ষতিই বেশি করে। তবে সম্পূর্ণ নতুনদের জন্য এটি বেশ কাজে আসে, অন্তত বাজার আর প্ল্যাটফর্ম কেমন কাজ করে তা জানতে।

ভার্চুয়াল অ্যাকাউন্টে আপনার কোনও আর্থিক ঝুঁকি না থাকায় গাণিতিকভাবে দাম কোথায় যাচ্ছে—এগুলো বোঝা সহজ হয়। কিন্তু এখানে বাস্তব অর্থের ট্রেডিং-এর আবেগ কাজ করে না, যা আসল ট্রেডের বিশাল অংশ।

তাই বেশি দিন ডেমোতে না থেকে, মৌলিক বিষয়গুলো শিখে নিলেই ছোট মূলধন নিয়ে রিয়েল অ্যাকাউন্টে চলে যাওয়া ভালো। সেক্ষেত্রে যদি বুঝতে পারেন ট্রেডিং আপনার জন্য নয়, ডেমোতে সময় দিয়েই সেটা বুঝে যাবেন—ফলে আর্থিক ক্ষতি হবে না।

ডেমোতে ঠিক যত দিন লেগে আপনার কাছে ট্রেডিংয়ের মূলনীতি ও প্রাইস মুভমেন্ট স্পষ্ট হবে, তত দিনই থাকুন। প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার ও দাম ওঠানামার ধরন বুঝে গেলে, রিয়েল অ্যাকাউন্টে নামুন ও সর্বনিম্ন রেট রেখে শুরু করুন।

প্রাথমিক সাফল্য ক্ষতিকর কেন

শুরুর দিকে লাভ করা একদিকে আনন্দের হলেও, অন্যদিকে বিপজ্জনক। নতুনরা প্রথম দিকে ভাগ্যের জোরে জিতে গেলেও, ভাগ্য ফুরোলে দক্ষতা না থাকায় বড় হতাশায় পড়েন।

বেশিরভাগ ট্রেডারই ভুল থেকে শিক্ষা নিয়ে উন্নতি করেন। তাই নিজের ক্ষমতা ঠান্ডা মাথায় বিচার করে, যেখানে যা ভুল আছে তা সংশোধন করুন। মার্কেটের মূল নিয়ম একটাই—শুরুর ডিপোজিট প্রায়ই লস হয়, যা আসলে “শিক্ষা ফি” হিসেবে কাজ করে এবং আপনার দুর্বল দিকগুলো উন্মোচন করে।

এতে ভেঙে পড়বেন না, বরং ভুলগুলো খুঁজে বের করুন। সফল ট্রেডারদের সাথে তুলনা করে দেখুন:
  • সফল ট্রেডাররা নির্দিষ্ট ফিক্সড এমাউন্টে ট্রেড করেন
  • একটি ট্রেডে কখনোই ট্রেড ব্যালান্সের ৫%-এর বেশি বিনিয়োগ করেন না
  • সফল ট্রেডাররা কখনোই মার্টিনগেল পদ্ধতি ব্যবহার করেন না
  • সফল ট্রেডাররা কৌশলের নিয়ম কড়াভাবে মেনে চলেন
  • সফল ট্রেডাররা আবেগের বশবর্তী হয়ে ট্রেড করেন না
আপনার ট্রেডিংয়ে এই তালিকায় কোনো তফাৎ পেলে দ্রুত সংশোধন করুন। নিজের ট্রেডিং বোঝাটা খুব গুরুত্বপূর্ণ, একে কখনোই উপেক্ষা করবেন না।

'গ্রেইল' খোঁজার চেষ্টা করবেন না

ট্রেডিংয়ে সহজ পথ ছিল না, ভবিষ্যতেও থাকবে না। অনেকে বছরের পর বছর ব্যয় করেন “সত্যিই লাভজনক” (ইন্ডিকেটর, কৌশল বা পদ্ধতি) খুঁজতে, শেষতক শূন্য হাতে ফিরেন।

মনে রাখবেন, ১০০% নিখুঁত কৌশল বা সিগন্যাল কখনোই থাকবে না। আপনার পদ্ধতি যদি ৭০% সময় লাভজনক অবস্থায় থাকে, সেটাই বাইনারি অপশনে খুব ভালো ফল।

বাইনারি বিকল্পগুলিতে গ্রিলটি সন্ধান করবেন না

অন্যদিকে, যদি কোনো ব্রোকার এক ট্রেডেই ৭০০% আয় করার ‘সুযোগ’ দেয়, জানবেন লসের ঝুঁকিও বহুগুণ। সবসময় স্কেপটিক বা সন্দেহপ্রবণ মানসিকতা রাখুন।

ব্রোকারের বোনাস সম্পর্কে সতর্ক থাকুন

বোনাসের শর্ত সবসময় ভাল করে পড়ুন! কিছু বোনাস আছে যা স্রেফ আপনার ডিপোজিট বাড়ায়, উত্তোলনে বাধা দেয় না—তবে বোনাস পুরোপুরি ‘ওয়ার্কআউট’ করার আগে যদি আপনি টাকা তুলতে চান, সেই বোনাসটি কেটে নেওয়া হবে।

আবার এমন বোনাসও আছে যা উত্তোলন কঠিন করে দেয়, যতক্ষণ না একটি নির্দিষ্ট ট্রেডিং টার্নওভার (মোট লেনদেন) পূরণ হয়। এই পরিমাণ ৩৫ বা ৫০ গুণ পর্যন্তও হতে পারে।

যদি ১০০ ডলার বোনাস নেন, আপনাকে কমপক্ষে ৫০০০ ডলারের মোট ট্রেড সম্পন্ন করতে হতে পারে—একজন নতুন ট্রেডারের পক্ষে যা প্রায় অসম্ভব। ফলে ফলাফল হয় বেশিরভাগ সময় ব্যালান্স লস।

ট্রেডিং লগ বা ট্রেডিং ডায়েরি রাখুন

ট্রেডিং ডায়েরি, যেখানে প্রতিটি লেনদেনের তথ্য লিপিবদ্ধ করা হয়, আপনার বিশ্লেষণের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ হাতিয়ার। এটি বলে দেবে আপনার কোথায়, কখন, কীভাবে ভুল হয়েছে, বা সঠিক হয়েছে।

একজন ব্যবসায়ী ডায়েরি রাখুন

কোনো কৌশল পরীক্ষা করতেও দারুণ সহায়ক এই ডায়েরি। এখানে আপনি দেখতে পারবেন:
  • কোন সময়ে কৌশল সবচেয়ে ভালো কাজ করে
  • কোন অ্যাসেট সবচেয়ে বেশি সাফল্য দেয়
  • আরও বেশি লাভের জন্য কী পরিবর্তন করা দরকার
অনেকে ট্রেডিং ডায়েরিকে মানসিক ডায়েরি হিসেবে ব্যবহার করেন, যেখানে আবেগ বা মানসিক অবস্থার বিবরণ থাকে। এটি ভয় বা অতিরিক্ত আনন্দের মতো আবেগের সমস্যা শনাক্ত করে। আবেগ ট্রেডিংকে বাধাগ্রস্ত করে, তাই এগুলো নিয়ন্ত্রণ শেখা জরুরি।

ট্রেডিং ডিসিপ্লিন গড়ে তুলুন

ট্রেডিংয়ে সঠিক কাজগুলো বারবার পুনরাবৃত্তি করা গুরুত্বপূর্ণ—একই নিয়মিত পদ্ধতিতে কাজ করা। এতে লস কমে যায় এবং যেখানে সম্ভাবনা থাকে সেখানে বেশি আয় করা যায়। এর জন্য দরকার ডিসিপ্লিন, যা নিশ্চিত করে:
  • কৌশলের নিয়ম কঠোরভাবে মেনে চলা
  • পরপর কয়েকটি লস হলে ট্রেড বন্ধ রাখা
  • ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা অনুসরণ করা
  • দৈনন্দিন ট্রেডিং পরিকল্পনা মেনে চলা
  • অতিরিক্ত আবেগ নিয়ন্ত্রণ করা
  • ট্রেডিং ফলাফল উন্নত করা
ট্রেডিং ডিসিপ্লিন হল স্থিতিশীল আয়ের মূল চাবিকাঠি। একে হালকাভাবে নেবেন না, বরং গভীরভাবে অনুশীলন করুন।

ট্রেডের আগেই ট্রেডিং প্ল্যান তৈরি করুন এবং মেনে চলুন

ট্রেডিং প্ল্যান অনেক অপ্রত্যাশিত ঘটনাকে সামলাতে সাহায্য করে। বিশেষ করে অস্বাভাবিক পরিস্থিতি যেন আপনাকে বিষম বিপদে না ফেলে।

ট্রেডিং প্ল্যান আগে থেকেই তৈরি করুন, যখন ডিপোজিট বা আপনার মানসিক স্থিতির ওপর কোনও চাপ নেই। সিদ্ধান্ত নিন:
  • কখন ট্রেড করবেন
  • কোন কৌশল ব্যবহার করবেন
  • প্রতি ট্রেডে কত বিনিয়োগ করবেন
  • ট্রেড যদি একের পর এক লস দিচ্ছে, তখন কী করবেন
  • সেই দিনের লক্ষ্য ও সর্বোচ্চ ক্ষতির সীমা কত রাখবেন
অবশ্যই আপনার পরিকল্পনায় অটল থাকুন—এতে ভুল সিদ্ধান্ত বা আবেগপ্রবণ আচরণ অনেক কমে যাবে।

ধৈর্য ধরুন

আপনার কৌশলে যেখানে সত্যিকারের ট্রেডিং সংকেত আসে, সেখানেই ট্রেড ওপেন করুন। তাড়াহুড়ো করা যাবে না—একটি ভুল একান্ত শান্ত অবস্থাও নষ্ট করে দিতে পারে, যা পরবর্তীতে আরও ভুলের দিকে নিয়ে যায় এবং শেষমেশ বড় ক্ষতির আশঙ্কা তৈরি করে।

ধৈর্য্য ধারন করুন

দ্রুত ফলাফলের আশা রাখবেন না! অনেক ট্রেডার বছরের পর বছর লসের পরেও ধৈর্য হারান না, পরিশ্রম চালিয়ে যান, শেষমেশ তারাই বড় সাফল্য পান। পথ চলতে চলতেই গন্তব্যে পৌঁছানো যায়!

ট্রেডিং কৌশল নিজের মতো করে গড়ে তুলুন

শুধুমাত্র সেই কৌশলেই ট্রেড করুন, যেগুলো আপনি ভালোভাবে বোঝেন। সে জন্য ইন্ডিকেটর, কৌশল ও সেগুলোর সংকেত কখন আসে, সব ভালোভাবে অধ্যয়ন করুন।

যদি কোনও উপাদান আপনার পছন্দ না হয়, সেটি বাদ দিন:
  • কোনো ইন্ডিকেটর অপছন্দ হলে সরিয়ে ফেলুন বা বিকল্প ব্যবহার করুন
  • ট্রেডিংয়ের সময় নিয়ে সমস্যা হলে, কৌশলকে নিজের সুবিধামতো সময়ে মানানসই করুন
  • এন্ট্রির শর্ত বা নিয়ম যদি মানানসই না হয়, প্রয়োজন অনুযায়ী যোগ-বিয়োগ করুন
একই কৌশল ভিন্ন ভিন্ন ট্রেডারের হাতে ভিন্নভাবে কাজ করে। তাই নিজের ট্রেডিং ধরন অনুযায়ী কৌশল এডজাস্ট করুন, উল্টোটা নয়।

পর্যাপ্ত ট্রেডিং মূলধন রাখুন

যদি আপনার ঋণ, ব্যাংক লোন, মর্টগেজ থেকে যায় এবং ভেবেছেন ট্রেডিং করেই সব শোধ করবেন, তাহলে সম্ভবত হবে না।

শুধু সেই অর্থ নিয়ে ট্রেড করুন, হারালে যেটা মেনে নিতে পারবেন—তাতেই লসের ভয় কমে আসে, এবং আপনি ট্রেডিংয়ের ওপর মনোযোগ দিতে পারবেন। অবশ্যই ব্যালান্সকে কিছু ড্রডাউন (আংশিক ক্ষতি) সহ্য করার মতো হতে হবে।

অনেক ব্রোকার ১০ ডলার মিনিমাম ডিপোজিট রাখলেও, তা দিয়ে ঝুঁকি ব্যবস্থাপনার নিয়ম মানা কঠিন—ফলে নিয়মিত লস হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। তাই অন্তত ৫০-১০০ ডলার বরাদ্দ করে, প্রতিটি ট্রেডে সর্বোচ্চ ১ ডলার বিনিয়োগ করুন।

এতে কয়েকটি লস হলেও আপনাকে পুরোপুরি নিঃস্ব হতে হবে না। সবসময় মনে রাখুন, আপনি কতটা হারাতে পারেন—এটাই দেখতে হবে, কতটা আয় করতে পারেন সেটা নয়!

শিখুন, শিখুন ও আরো শিখুন!

স্পঞ্জের মতো সব তথ্য শুষে নিন—যত বেশি জানবেন, তত কম ভুল করবেন।

বই পড়ুন, এমনকি গত শতাব্দীতে লেখা বইও। দাম ও বাজারের মৌলিক ধারণাগুলো এখনো একই আছে, তাই সেগুলো আজও প্রাসঙ্গিক।

তবে তথ্য বাছাই বা ফিল্টার করতে শিখুন। এখন এমন অনেক “গুরু-ট্রেডার” আছেন, যারা আসলে প্রফিটেবল ট্রেডের কিছুই জানেন না, কিন্তু “গুরু মতামত” দিতে বসে যান। প্রায় ৯৫% এর মতো এই শ্রেণিভুক্ত, তাই যেকোনো জায়গায় তাদের দেখা মিলবে।

শিখুন

“গুরু”দের একটা সহজ স্বাক্ষর হল মার্টিনগেল বা বড় বড় রিস্ক নিয়ে ট্রেড (যেমন এক ট্রেডে ১০-১০০% ব্যালান্স)। দেখলেই সরে পড়ুন; এরা কখনো আপনাকে ভালো শেখাবে না!

বিভিন্ন অ্যাসেটের চার্ট ও দাম ওঠানামা বুঝতে শিখুন

চার্টের প্রযুক্তিগত বিশ্লেষণ জানতে পারলে দামের ভবিষ্যৎ গতিবিধি দ্রুত আঁচ করা ও তাতে আয় করা সহজ হয়। অনেকে বলে, ১০,০০০ ঘণ্টা চার্ট পর্যবেক্ষণ আর বিশ্লেষণ করলে আপনি এ বিষয়ে দক্ষ হয়ে উঠবেন।

এত সময়ে আপনার মাথায় যত প্রয়োজনীয় তথ্য জমা হবে, আপনি সহজাতভাবেই লাভজনক এন্ট্রি খুঁজে পাবেন। যদি দেখেন কোনো ট্রেডার আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে চার্ট বিশ্লেষণ করে এন্ট্রি নিচ্ছে, বুঝবেন তার পেছনে বহু অভিজ্ঞতা কাজ করছে।

সবকিছু একসঙ্গে শেখার চেষ্টা করবেন না

ট্রেডিং নিয়ে তথ্যের অভাব নেই। কিন্তু অপ্রয়োজনীয়ভাবে অনেক কিছু একসঙ্গে শিখতে গেলে দ্বিধা ও বিভ্রান্তি তৈরি হয়। তাই ধীরে ধীরে শিখুন:
  • প্রথমে মৌলিক বিষয়
  • ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা
  • ট্রেডিং মনস্তত্ত্ব
  • ট্রেডিং ডিসিপ্লিন
  • চার্ট বিশ্লেষণের গভীর জ্ঞান (প্রযুক্তিগত বিশ্লেষণ)
  • ফান্ডামেন্টাল অ্যানালাইসিস (অর্থনৈতিক সংবাদ বিশ্লেষণ)
  • বিভিন্ন ট্রেডিং পদ্ধতি
একবারে সব জেনে ফেলার চেষ্টা সময় বাঁচাবে না, বরং শেখার গতি ব্যাহত করবে।

কখনো মার্টিনগেল পদ্ধতিতে ট্রেড করবেন না

মার্টিনগেল বা লসের পর ইনভেস্টমেন্ট দ্বিগুণ করার কৌশল ট্রেডিংয়ে কার্যকর নয়। এটা একবারে মনে গেঁথে ফেলুন! যদি আপনি আপনার সম্পূর্ণ মূলধন ঝুঁকিতে ফেলতে চান, চেষ্টা করে দেখতে পারেন, তবে ফলাফল নেতিবাচক হবে—এর সব দায় আপনারই।

মার্টিংগেল পদ্ধতির সাথে বাণিজ্য করবেন না

মার্টিনগেলে মূলত সেইসব ট্রেডার আছেন, যারা ‘দ্রুত আয়’এর গল্পে বিশ্বাস রাখেন। ফলে ৯৫% ট্রেডার টিকে থাকতে পারেন না। আপনি কি তাদের দলে যেতে চান? মার্টিনগেল সিস্টেম আপনার অপেক্ষায় আছে!

বাস্তবসম্মত লক্ষ্য স্থির করুন

ট্রেডিংয়ে লক্ষ্য হওয়া চাই বাস্তব, অর্জনযোগ্য, পরিমাপযোগ্য, নির্দিষ্ট ও সময়সীমাবদ্ধ। এসব কারণেই লক্ষ্য ঠিক করে এগোনো এবং ট্রেডিং স্কিল উন্নয়ন সম্ভব হয়।

একটি উদাহরণ: এক মাসের (সময়সীমা) মধ্যে ট্রেডিং ব্যালান্সের ১৫% লাভ করা (সম্ভব? হ্যাঁ! বাস্তবসম্মত? হ্যাঁ! পরিমাপযোগ্য? হ্যাঁ! নির্দিষ্ট? হ্যাঁ!)।

প্রতারক থেকে সাবধান

এখনো কিছু ব্রোকার আছে যারা একদিনের মধ্যে গায়েব হয়ে যায় বা পুরোপুরি প্রতারক। দীর্ঘদিন ধরে কার্যক্রম চালাচ্ছে এবং তুলনামূলক কম নেগেটিভ রিভিউ আছে—এমন ব্রোকার বেছে নিন। যদিও প্রতিটি ব্রোকারেরই কিছু নেতিবাচক রিভিউ থাকে, মাঝে মধ্যে সেগুলো প্রতিযোগীরাও লেখে।

এছাড়াও ব্যক্তিপর্যায়ের কিছু প্রতারক কাজ করে:
  • “১০০% সফলতার নিশ্চয়তা”ওয়ালা ট্রেডিং কৌশল বিক্রি করে
  • “অদ্বিতীয়” ইন্ডিকেটর বা সফটওয়্যার বিক্রি করে
  • টাকা দিয়ে বা ফ্রিতে ট্রেডিং সিগন্যাল বিতরণ করে
  • আপনার অ্যাকাউন্ট পরিচালনা করে দেবে বলে দাবি করে
  • আপনার তহবিল “বিনিয়োগ” হিসেবে নেয়
  • আপনাকে মার্টিনগেল শেখায়
আগেই বলেছি, নিজের মাথা খাটিয়ে ট্রেড করুন। পয়সা খরচ না করেই প্রায় সবকিছু ফ্রিতে পাওয়া যায়।

বাইনারি অপশন ব্রোকারের শর্তাবলী পড়ে নিন

ইউজার অ্যাগ্রিমেন্টে (যা কেউই সাধারণত পড়ে না) অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় থাকে। বিশেষ করে ব্রোকার তার গ্রাহকদের কী কী নিষেধ করছে, খেয়াল রাখুন। সাধারণত:
  • একাধিক ট্রেডিং অ্যাকাউন্ট রাখা নিষিদ্ধ
  • তৃতীয় পক্ষের সফটওয়্যার ব্যবহার নিষিদ্ধ
  • ট্রেডিং রোবট ব্যবহার নিষিদ্ধ
  • ব্রোকারের প্ল্যাটফর্মে কোনো ত্রুটি খুঁজে পেলে সেটি ব্যবহার করা নিষিদ্ধ
  • কিছু ক্ষেত্রে মার্টিনগেল পদ্ধতি পর্যন্ত নিষিদ্ধ হতে পারে
  • বোনাস ফান্ড নিয়ে জালিয়াতি নিষিদ্ধ
এগুলোর কোনওটি ভাঙলে ব্রোকার আপনার অ্যাকাউন্ট ব্লক করতে পারে। যদি ব্রোকার সৎ হয় এবং ভুলটা আপনার, সাধারণত আপনাকে মূল টাকাটা ফেরত দেয় (যদি আগে বেশি উত্তোলন না করে থাকেন)। তবু বিষয়টা মোটেই আনন্দদায়ক নয়।

সম্ভব হলে আগে থেকেই অ্যাকাউন্ট ভেরিফাই করুন

কিছু বাইনারি অপশন ব্রোকার অ্যাকাউন্ট ভেরিফিকেশন বা ক্লায়েন্টের পরিচয় নিশ্চিত করা বাধ্যতামূলক করে রেখেছে। প্রয়োজনীয় কাগজপত্র আগে থেকেই জমা রাখলে উত্তোলন করতে দেরি হয় না।

ভেরিফিকেশন ছাড়া সাধারণত টাকা তুলতে পারবেন না, তাই রেজিস্ট্রেশনের পরপরই অ্যাকাউন্ট ভেরিফাই করা উত্তম। প্রায়ই প্রয়োজন হয়:
  • পরিচয়পত্র ও বয়সের প্রমাণ (পাসপোর্ট বা ড্রাইভিং লাইসেন্স)
  • বর্তমান ঠিকানার প্রমাণ (ইউটিলিটি বিল, ব্যাংক স্টেটমেন্ট ইত্যাদি)
  • যে প্লাস্টিক কার্ড ব্যবহার করে ডিপোজিট করেছেন, তার ছবি
কিছু ব্রোকারে রেজিস্ট্রেশনের সময় তাৎক্ষণিক ভেরিফিকেশন সম্ভব নয়, প্রথম উত্তোলনের সময়েই তা করতে হয়। ব্রোকারের ভেরিফিকেশন ডিপার্টমেন্ট ফাঁকা ক্লায়েন্টের কাজ করতে চায় না—এতে সময় ও শ্রম অপচয় হয়।

সবসময় নিজের নাম ও সঠিক তথ্য দিয়েই অ্যাকাউন্ট খুলুন, ভবিষ্যতে জটিলতা এড়াতে।

অভিজ্ঞতা শেষ পর্যন্ত জয়ী হয়

ট্রেডিংয়ে তিনি-ই সফল হন, যিনি সব বাধা পেরিয়ে শেখার পথে লেগে থাকেন। হয়তো আমাকে এখন সহজেই বলতে শুনছেন, কিন্তু আমিও একসময় একেবারে নতুন ছিলাম—ট্রেডিং সম্পর্কে বিন্দুমাত্র ধারণা ছিল না।

আমার যথেষ্ট অধ্যবসায় ও স্থির সংকল্প ছিল মাঝপথে ছেড়ে না দেওয়ার জন্য। কঠিন ছিল, খুব কঠিন। তবে এখন যা পেয়েছি তা হল আমার একটি উচ্চ-আয়ের কাজ, যেখানে আমি ইচ্ছেমতো সময় দিতে পারি, আর অর্থনৈতিক স্বাধীনতাও আছে।

আপনার মনে হতে পারে, এত পরিশ্রমের মূল্য কতখানি? এটা অবশ্য আপনার সিদ্ধান্ত। কিন্তু যদি ঠিক করেন, তবে শেষ পর্যন্ত দৃঢ় থাকুন। সময়ের সাথে সাথে অভিজ্ঞতা গড়ে উঠবেই। প্রতিটি পদক্ষেপে আপনার জ্ঞানের ভান্ডার পূর্ণ হবে, যা আপনাকে সফল ট্রেডার হতে সাহায্য করবে। সবকিছুই নির্ভর করছে আপনার ওপর! এগিয়ে যান!
Igor Lementov
Igor Lementov - trading-everyday.com এ আর্থিক বিশেষজ্ঞ ও বিশ্লেষক


আপনার জন্য সহায়ক প্রবন্ধসমূহ
পর্যালোচনা এবং মন্তব্য
মোট মন্তব্যs: 0
avatar