বাইনারি অপশন কারেন্সি পেয়ার: নির্দেশিকা (2025)
Updated: 29.04.2025
বাইনারি অপশন ট্রেডিংয়ে কারেন্সি পেয়ার: বাইনারি অপশনের প্রধান অ্যাসেট (2025)
প্রতিটি নতুন ট্রেডারকেই শুরুতে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নের মুখোমুখি হতে হয়: কী ট্রেড করবেন? এখনকার সময়ে ট্রেডের জন্য প্রচুর অ্যাসেট থাকায়, চোখ সহজেই ঘুরপাক খেতে পারে। সাধারণত বাইনারি অপশন ট্রেডিংয়ে চার ধরণের প্রধান অ্যাসেট রয়েছে:
আরো একটা কারণ হলো, শেয়ার সাধারণত ২৪ ঘন্টা ট্রেড করা যায় না এবং ইন্ডেক্স ট্রেডিং করতে কিছু বাড়তি জ্ঞান থাকা দরকার। সুতরাং কারেন্সি পেয়ার নিয়েই আজকে আমরা বিস্তারিত আলোচনা করব।
যেকোনো কারেন্সি পেয়ারের কোটেশন সাধারণত এইভাবে নির্ধারিত হয়:
Ask ও Bid মুল্যের মধ্যে পার্থক্যকে বলা হয় স্প্রেড:
যে কোনো কারেন্সি পেয়ার দু'টি মুদ্রা নিয়ে গঠিত এবং প্রতিটি মুদ্রার মূল্য তার দেশের অর্থনীতির অনেক বিষয়ের ওপর নির্ভর করে। উদাহরণস্বরূপ, ইউরোর ক্ষেত্রে জার্মানি সহ ইউরোপের বিভিন্ন দেশের অর্থনীতি, মার্কিন ডলারের ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতি, ব্রিটিশ পাউন্ডের ক্ষেত্রে যুক্তরাজ্যের অর্থনীতি – এভাবে প্রত্যেকটির আলাদা প্রভাব থাকে।
যদি কোনো দেশের অর্থনৈতিক উন্নতি হয়, ওই দেশের মুদ্রা শক্তিশালী হয় (মূল্য বেড়ে যায়) – তা সে বেস কারেন্সি হোক বা কোটেড কারেন্সি। তাই, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতির পক্ষে ইতিবাচক খবর এলে USD শক্তিশালী হবে। যদি ওই USD বাইনারি অপশনের কোনো পেয়ারে থাকে (যেমন EUR/USD), তাহলে ইউএসডি শক্তিশালী হলে পার্টনার কারেন্সি EUR তুলনামূলকভাবে দুর্বল হয় এবং ফলস্বরূপ EUR/USD পেয়ারের মূল্য নিম্নমুখী হতে পারে (B)।
ক্রস পেয়ার এ সমস্যার সমাধান করেছে – যেমন EUR/GBP দেখায়, ১ ইউরোর দাম কত পাউন্ড। ক্রস পেয়ারের উদাহরণ:
বাইনারি অপশনে বেশি দেখা যায় এমন ক্রিপ্টোকারেন্সি:
আপনি চাইলে গুরুত্বপূর্ণ অর্থনৈতিক খবর একদম এড়িয়ে যেতে পারেন, কিন্তু তাতে দেখা যাবে হয়তো ট্রেডের জন্য সময়ই তেমন থাকে না। কাজেই দুটি বিকল্পের একটিতে সিদ্ধান্ত নিতে হবে:
অবশ্যই, GBP পেয়ার নতুনদের কাছে বেশ আকর্ষণীয় হতে পারে। তবে ব্যক্তিগতভাবে আমি ট্রেডিং ডিসিপ্লিন-এর ওপর বেশি জোর দিই, যা আমাকে বহু ট্রেডিং কৌশল আত্মবিশ্বাসের সাথে ব্যবহার করতে সহায়তা করে। একইসঙ্গে ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা ও অর্থ পরিচালনা (ব্যালেন্স ব্যবস্থাপনার নিয়ম) মানার কারণে আমি যেকোনো অ্যাসেট সহজে দ্বিতীয় পর্যায়ে রাখতে পারি।
ভোলাটিলিটি গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এটি নির্ধারণ করে আপনি কোন কৌশল এখন ব্যবহার করবেন। ফরেক্সে সাধারণত দাম কেনার সময় থেকে যথেষ্ট দূরত্বে যেতে হবে (শক্তিশালী ট্রেন্ড লাগবে), কিন্তু বাইনারি অপশনে সময়সীমা (এক্সপায়ারি) শেষ হলেই মেয়াদ শেষ হয়ে যায়, তাই খুব বড় ট্রেন্ডের প্রয়োজন হয় না।
ট্রেন্ড অনুমান করা তুলনামূলক সহজ; শুধু খেয়াল রাখতে হবে কখন এটি কমে যাচ্ছে বা দিক পরিবর্তন করছে। নবীন থেকে অভিজ্ঞ ট্রেডার - বেশিরভাগের কাছেই বর্তমান ট্রেন্ডের দিকেই এন্ট্রি খোঁজা সুবিধাজনক, কারণ সেগুলো সাধারণত নির্ভরযোগ্য। চার্টেই আপনি সহজে ট্রেন্ড ধরতে পারবেন।
এছাড়া বাইনারি অপশনে "ফ্ল্যাট" বা "প্রাইস কনসোলিডেশন" ধরনের পাশের দিকে চলা (sideways) বাজারেও ট্রেড করা যায়, যেখানে ফরেক্সে অনেক সময় এটা কৌশলে নেওয়া হয় না। ফ্ল্যাট মার্কেটে দাম এক রেঞ্জের মধ্যে ওঠানামা করে, সুতরাং ওই রেঞ্জের সাপোর্ট ও রেজিস্ট্যান্স থেকে ট্রেড করে লাভ নেওয়া যেতে পারে।
প্রায়ই দেখা যায়, ট্রেন্ডের চেয়ে ফ্ল্যাট মার্কেটে ট্রেড করা কিছু নতুন ট্রেডারের জন্য সহজ হতে পারে। এখানে পুরো বিষয়টি ব্যক্তিগত কৌশলের ওপর নির্ভর করে, তাই আপনাকে নিজের জন্য কোনটি ভালো, তা বুঝে নিতে হবে।
ফলে প্রধানত চারটি প্রধান ট্রেডিং সেশন পাওয়া যায়:
সেশনগুলোর নাম কখনো কখনো বড় শহরগুলোর নামে পরিচিত:
একটি বিষয় স্পষ্ট: একসঙ্গে ডজনখানেক কারেন্সি পেয়ার শেখার চেষ্টা না করাই ভালো; এতে প্রয়োজনীয় তথ্য হাতছাড়া হবে এবং বিশেষজ্ঞ হওয়া কঠিন হবে। বরং ২-৩টি পেয়ার নিয়ে গভীরে গিয়ে পর্যবেক্ষণ ও গবেষণা করে শুরু করুন।
আমি ব্যক্তিগতভাবে GBP পেয়ার দিয়ে শুরু করার পরামর্শ দেব, কারণ আগেই বলেছি পাউন্ড তুলনামূলকভাবে স্থিতিশীল ও পূর্বাভাসযোগ্য। তাছাড়া ক্রিপ্টোকারেন্সি BTC (Bitcoin)-ও কখনো কখনো নতুনদের জন্য সহজ হতে পারে। তবে সমস্যা হলো, সব বাইনারি অপশন ব্রোকার ক্রিপ্টোকারেন্সি অফার করে না, যেভাবে সাধারণ কারেন্সি পেয়ার অফার করে।
যদি আপনার ট্রেডিং মনস্তত্ত্বের সমস্যার কারণে অ্যাসেটের সংখ্যা কমিয়ে আনতে চান, তাহলে শুধু ১টি কারেন্সি পেয়ারেই ট্রেড করতে পারেন। ভালো সেটআপের অভাব হবে না – সুযোগ যথেষ্ট।
শেষমেষ আপনাকেই ঠিক করতে হবে কোন কারেন্সি পেয়ার নিয়ে কাজ করবেন এবং তাতেই গভীরভাবে গবেষণা ও চর্চা চালিয়ে যাবেন। প্রতিটি অ্যাসেটের দাম সংশ্লিষ্ট দেশের অর্থনৈতিক খবরে প্রভাবিত হয়, তাই অর্থনৈতিক খবর ও দামের গতিপ্রকৃতির মধ্যে যোগসূত্র খুঁজে বের করা জরুরি।
এটা পড়তে গিয়ে কঠিন লাগতে পারে, কিন্তু শুরু করলে দেখবেন ধাপে ধাপে সব বোঝা যাবে, আর অভিজ্ঞতা অর্জন করতে করতে এগিয়ে যেতে পারবেন।
- কারেন্সি পেয়ার (বিভিন্ন দেশের মুদ্রার সমন্বয়)
- শেয়ার (বিভিন্ন বড় প্রতিষ্ঠানের)
- ইন্ডেক্স (একটি গ্রুপে অন্তর্ভুক্ত একাধিক কোম্পানির শেয়ার মূল্য মিলিয়ে তৈরি)
- ক্রিপ্টোকারেন্সি (ভার্চুয়াল মুদ্রা এবং/অথবা বাস্তব মুদ্রার সমন্বয়ে গঠিত কারেন্সি পেয়ার)
আরো একটা কারণ হলো, শেয়ার সাধারণত ২৪ ঘন্টা ট্রেড করা যায় না এবং ইন্ডেক্স ট্রেডিং করতে কিছু বাড়তি জ্ঞান থাকা দরকার। সুতরাং কারেন্সি পেয়ার নিয়েই আজকে আমরা বিস্তারিত আলোচনা করব।
সুচিপত্র
- বাইনারি অপশন ট্রেডিংয়ে কারেন্সি পেয়ার
- বাইনারি অপশনে কারেন্সি পেয়ারের অর্থ কীভাবে বোঝা যায়
- বাইনারি অপশন ব্রোকারদের কারেন্সি পেয়ারের ধরন
- বাইনারি অপশনে কমোডিটি কারেন্সি
- নতুনদের জন্য সবচেয়ে উপযোগী কারেন্সি পেয়ার
- বাইনারি অপশন ট্রেডিংয়ে কারেন্সি পেয়ারের ভোলাটিলিটি
- বাইনারি অপশনে ফরেক্স মার্কেটের ট্রেডিং সেশন
বাইনারি অপশন ট্রেডিংয়ে কারেন্সি পেয়ার
সব কারেন্সি পেয়ার (এটি যতই স্বাভাবিক লাগুক না কেন) দু'টি মুদ্রা নিয়ে গঠিত:- প্রথম কারেন্সি হলো বেস
- দ্বিতীয় কারেন্সি হলো কোটেড
যেকোনো কারেন্সি পেয়ারের কোটেশন সাধারণত এইভাবে নির্ধারিত হয়:
- কেনার দাম (Ask)
- বিক্রির দাম (Bid)
Ask ও Bid মুল্যের মধ্যে পার্থক্যকে বলা হয় স্প্রেড:
বাইনারি অপশনে কারেন্সি পেয়ারের অর্থ কীভাবে বোঝা যায়
প্রতিটি কারেন্সি পেয়ার আসলে এক মুদ্রার মূল্য অন্য মুদ্রায় প্রকাশ করে। উদাহরণ হিসেবে জনপ্রিয় EUR/USD পেয়ারের কোটেশন যদি ১.২৮৮০ হয়, তবে এর মানে হলো:- EUR/USD = ১.২৮৮০, অর্থাৎ ১ ইউরো কিনতে ১.২৮৮০ মার্কিন ডলার লাগছে।
যে কোনো কারেন্সি পেয়ার দু'টি মুদ্রা নিয়ে গঠিত এবং প্রতিটি মুদ্রার মূল্য তার দেশের অর্থনীতির অনেক বিষয়ের ওপর নির্ভর করে। উদাহরণস্বরূপ, ইউরোর ক্ষেত্রে জার্মানি সহ ইউরোপের বিভিন্ন দেশের অর্থনীতি, মার্কিন ডলারের ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতি, ব্রিটিশ পাউন্ডের ক্ষেত্রে যুক্তরাজ্যের অর্থনীতি – এভাবে প্রত্যেকটির আলাদা প্রভাব থাকে।
যদি কোনো দেশের অর্থনৈতিক উন্নতি হয়, ওই দেশের মুদ্রা শক্তিশালী হয় (মূল্য বেড়ে যায়) – তা সে বেস কারেন্সি হোক বা কোটেড কারেন্সি। তাই, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতির পক্ষে ইতিবাচক খবর এলে USD শক্তিশালী হবে। যদি ওই USD বাইনারি অপশনের কোনো পেয়ারে থাকে (যেমন EUR/USD), তাহলে ইউএসডি শক্তিশালী হলে পার্টনার কারেন্সি EUR তুলনামূলকভাবে দুর্বল হয় এবং ফলস্বরূপ EUR/USD পেয়ারের মূল্য নিম্নমুখী হতে পারে (B)।
বাইনারি অপশন ব্রোকারদের কারেন্সি পেয়ারের ধরন
বিভিন্ন বাইনারি অপশন ব্রোকারে মূলত ৪টি ধরণের কারেন্সি পেয়ার দেখতে পাবেন:- মেজর বা প্রধান কারেন্সি পেয়ার
- ক্রস পেয়ার
- এক্সোটিক কারেন্সি পেয়ার
- ক্রিপ্টোকারেন্সি
মেজর কারেন্সি পেয়ার
মেজর কারেন্সি পেয়ার বলতে সাধারণত সবচেয়ে জনপ্রিয় বড় অর্থনীতির দেশের মুদ্রার সমন্বয়কে বোঝায়। এসব দেশের মধ্যে রয়েছে:- মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র
- যুক্তরাজ্য
- জাপান
- সুইজারল্যান্ড
- কানাডা
- EUR/USD
- USD/JPY
- GBP/USD
- AUD/USD
- USD/CHF
- NZD/USD
- USD/CAD
ক্রস পেয়ার
ক্রস পেয়ার মূলত এমন মুদ্রা বিনিময় যেখানে মার্কিন ডলারকে মাঝখানে আর দরকার হয় না। আগে যদি কেউ ইউরো থেকে পাউন্ডে যেতে চাইতেন, তাকে প্রথমে ইউরো ডলারে বদলে তারপর ডলার থেকে পাউন্ডে যেতে হতো।ক্রস পেয়ার এ সমস্যার সমাধান করেছে – যেমন EUR/GBP দেখায়, ১ ইউরোর দাম কত পাউন্ড। ক্রস পেয়ারের উদাহরণ:
- GBP/JPY
- EUR/GBP
- CAD/JPY
- AUD/CAD
- EUR/AUD
- NZD/JPY
- EUR/NZD
এক্সোটিক কারেন্সি পেয়ার
এক্সোটিক কারেন্সি পেয়ার সাধারণত অপেক্ষাকৃত ছোট বা উন্নয়নশীল দেশের মুদ্রার সাথে সম্পর্কিত, যাদের অর্থনীতি সেভাবে শক্তিশালী নয়। এসব পেয়ার তুলনামূলক কম ট্রেড হয়, কিন্তু জেনে রাখা ভালো। উদাহরণ:- EUR/TRY
- USD/SEK
- USD/NOK
- USD/DKK
- USD/ZAR
- USD/HKD
- USD/SGD
ক্রিপ্টোকারেন্সি
ক্রিপ্টোকারেন্সি তুলনামূলকভাবে নতুন। এটি ভার্চুয়াল মুদ্রা, অনলাইনে লেনদেনের মাধ্যম হিসেবে ব্যবহার করা যায়। বাইনারি অপশনে ক্রিপ্টোকারেন্সি সাধারণত ডলারের বিপরীতে মূল্যায়িত হয়ে থাকে (যেমন BTC/USD)। কখনো কখনো নাম থেকেই এটা স্পষ্ট, কখনো আবার ঠিক বোঝা যায় না।বাইনারি অপশনে বেশি দেখা যায় এমন ক্রিপ্টোকারেন্সি:
- BTC/USD (Bitcoin বনাম USD)
- LTC/USD (Litcoin বনাম USD)
- Dash/USD (Dash বনাম USD)
- ETH/BTC (Ethereum বনাম Bitcoin)
- BTC/EUR (Bitcoin বনাম ইউরো)
- BTC/JPY (Bitcoin বনাম জাপানি ইয়েন)
বাইনারি অপশনে কমোডিটি কারেন্সি
কমোডিটি কারেন্সি হলো এমন সব দেশের মুদ্রা, যাদের অর্থনীতি মূলত তেল, স্বর্ণ কিংবা রূপার মতো পণ্য রপ্তানি থেকে বড়ো আয় করে:- তেল
- স্বর্ণ
- রূপা
- কপার
- নিকেল
- প্লাটিনাম
- চিনি
- CAD (কানাডিয়ান ডলার)
- AUD (অস্ট্রেলিয়ান ডলার)
- NZD (নিউজিল্যান্ড ডলার)
- BRL (ব্রাজিলিয়ান রিয়েল)
- NOK (নরওয়েজিয়ান ক্রোন)
- CLP (চিলির পেসো)
নতুনদের জন্য সবচেয়ে উপযোগী কারেন্সি পেয়ার
সবচেয়ে বেশি ট্রেড হওয়া কারেন্সি পেয়ার হলো EUR/USD, অনেক নতুন ট্রেডার এটিতেই হাতেখড়ি নেন। তবে কোনো অ্যাসেট জনপ্রিয় হলেই যে তা সহজ হবে, এমন নিশ্চয়তা নেই। EUR/USD আকছার ইউরোপ ও আমেরিকার গুরুত্বপূর্ণ অর্থনৈতিক খবরের অধীন, যা খুব ঘন ঘন বের হয়।আপনি চাইলে গুরুত্বপূর্ণ অর্থনৈতিক খবর একদম এড়িয়ে যেতে পারেন, কিন্তু তাতে দেখা যাবে হয়তো ট্রেডের জন্য সময়ই তেমন থাকে না। কাজেই দুটি বিকল্পের একটিতে সিদ্ধান্ত নিতে হবে:
- অথবা জটিল কারেন্সি পেয়ার ট্রেড করা শিখুন
- অথবা অপেক্ষাকৃত সহজ কারেন্সি পেয়ার খুঁজুন
অবশ্যই, GBP পেয়ার নতুনদের কাছে বেশ আকর্ষণীয় হতে পারে। তবে ব্যক্তিগতভাবে আমি ট্রেডিং ডিসিপ্লিন-এর ওপর বেশি জোর দিই, যা আমাকে বহু ট্রেডিং কৌশল আত্মবিশ্বাসের সাথে ব্যবহার করতে সহায়তা করে। একইসঙ্গে ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা ও অর্থ পরিচালনা (ব্যালেন্স ব্যবস্থাপনার নিয়ম) মানার কারণে আমি যেকোনো অ্যাসেট সহজে দ্বিতীয় পর্যায়ে রাখতে পারি।
বাইনারি অপশন ট্রেডিংয়ে কারেন্সি পেয়ারের ভোলাটিলিটি
ভোলাটিলিটি বলতে খুব অল্প সময়ে দাম কতটা দ্রুত ও বড়সড় উঠানামা করে, সেটাই বোঝায়। যদি মূল্য খুব দ্রুত ওপরে লাফিয়ে ওঠে এবং তৎক্ষণাৎ নিচে নেমে আসে অথবা খুব শক্তিশালী কোনো ট্রেন্ড থাকে, তাহলে ওই অ্যাসেটের ভোলাটিলিটি বেশি বলে ধরা হয়। আর যদি দাম ধীরে ধীরে ওঠানামা করে কিংবা অনেকটা সমান্তরাল পথে চলে, তবে ভোলাটিলিটি কম।ভোলাটিলিটি গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এটি নির্ধারণ করে আপনি কোন কৌশল এখন ব্যবহার করবেন। ফরেক্সে সাধারণত দাম কেনার সময় থেকে যথেষ্ট দূরত্বে যেতে হবে (শক্তিশালী ট্রেন্ড লাগবে), কিন্তু বাইনারি অপশনে সময়সীমা (এক্সপায়ারি) শেষ হলেই মেয়াদ শেষ হয়ে যায়, তাই খুব বড় ট্রেন্ডের প্রয়োজন হয় না।
ট্রেন্ড অনুমান করা তুলনামূলক সহজ; শুধু খেয়াল রাখতে হবে কখন এটি কমে যাচ্ছে বা দিক পরিবর্তন করছে। নবীন থেকে অভিজ্ঞ ট্রেডার - বেশিরভাগের কাছেই বর্তমান ট্রেন্ডের দিকেই এন্ট্রি খোঁজা সুবিধাজনক, কারণ সেগুলো সাধারণত নির্ভরযোগ্য। চার্টেই আপনি সহজে ট্রেন্ড ধরতে পারবেন।
এছাড়া বাইনারি অপশনে "ফ্ল্যাট" বা "প্রাইস কনসোলিডেশন" ধরনের পাশের দিকে চলা (sideways) বাজারেও ট্রেড করা যায়, যেখানে ফরেক্সে অনেক সময় এটা কৌশলে নেওয়া হয় না। ফ্ল্যাট মার্কেটে দাম এক রেঞ্জের মধ্যে ওঠানামা করে, সুতরাং ওই রেঞ্জের সাপোর্ট ও রেজিস্ট্যান্স থেকে ট্রেড করে লাভ নেওয়া যেতে পারে।
প্রায়ই দেখা যায়, ট্রেন্ডের চেয়ে ফ্ল্যাট মার্কেটে ট্রেড করা কিছু নতুন ট্রেডারের জন্য সহজ হতে পারে। এখানে পুরো বিষয়টি ব্যক্তিগত কৌশলের ওপর নির্ভর করে, তাই আপনাকে নিজের জন্য কোনটি ভালো, তা বুঝে নিতে হবে।
বাইনারি অপশনে ফরেক্স মার্কেটের ট্রেডিং সেশন
ফরেক্স মার্কেটে সপ্তাহে ৫ দিন, দিনে ২৪ ঘণ্টা মুদ্রা কেনাবেচা হয়। তবে বিশ্বজুড়ে একটানা কেউ মুদ্রা লেনদেন করে না, কারণ কাজের সময় ও বিশ্রামের দরকার আছে। কাজেই প্রতিটি কর্মদিবস বিভিন্ন সেশনে ভাগ করা হয়, যেখানে আলাদা অঞ্চলের ট্রেডাররা কাজে আসেন।ফলে প্রধানত চারটি প্রধান ট্রেডিং সেশন পাওয়া যায়:
- এশিয়ান
- ইউরোপিয়ান
- আমেরিকান
- অস্ট্রেলিয়ান
সেশনগুলোর নাম কখনো কখনো বড় শহরগুলোর নামে পরিচিত:
- এশিয়ান (টোকিও)
- ইউরোপিয়ান (লন্ডন)
- আমেরিকান (নিউ ইয়র্ক)
- অস্ট্রেলিয়ান (সিডনি)
বাইনারি অপশনে কোন কারেন্সি পেয়ার ব্যবহার করবেন
অভিজ্ঞ ট্রেডাররা সাধারণত সেই পেয়ারগুলো ব্যবহার করেন, যেগুলো তারা ভালোভাবে বোঝেন ও পূর্বাভাস দিতে পারেন। কাজেই আপনার ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা ও পছন্দের ওপর নির্ভর করে কোন কারেন্সি পেয়ারে ফোকাস করবেন।একটি বিষয় স্পষ্ট: একসঙ্গে ডজনখানেক কারেন্সি পেয়ার শেখার চেষ্টা না করাই ভালো; এতে প্রয়োজনীয় তথ্য হাতছাড়া হবে এবং বিশেষজ্ঞ হওয়া কঠিন হবে। বরং ২-৩টি পেয়ার নিয়ে গভীরে গিয়ে পর্যবেক্ষণ ও গবেষণা করে শুরু করুন।
আমি ব্যক্তিগতভাবে GBP পেয়ার দিয়ে শুরু করার পরামর্শ দেব, কারণ আগেই বলেছি পাউন্ড তুলনামূলকভাবে স্থিতিশীল ও পূর্বাভাসযোগ্য। তাছাড়া ক্রিপ্টোকারেন্সি BTC (Bitcoin)-ও কখনো কখনো নতুনদের জন্য সহজ হতে পারে। তবে সমস্যা হলো, সব বাইনারি অপশন ব্রোকার ক্রিপ্টোকারেন্সি অফার করে না, যেভাবে সাধারণ কারেন্সি পেয়ার অফার করে।
যদি আপনার ট্রেডিং মনস্তত্ত্বের সমস্যার কারণে অ্যাসেটের সংখ্যা কমিয়ে আনতে চান, তাহলে শুধু ১টি কারেন্সি পেয়ারেই ট্রেড করতে পারেন। ভালো সেটআপের অভাব হবে না – সুযোগ যথেষ্ট।
শেষমেষ আপনাকেই ঠিক করতে হবে কোন কারেন্সি পেয়ার নিয়ে কাজ করবেন এবং তাতেই গভীরভাবে গবেষণা ও চর্চা চালিয়ে যাবেন। প্রতিটি অ্যাসেটের দাম সংশ্লিষ্ট দেশের অর্থনৈতিক খবরে প্রভাবিত হয়, তাই অর্থনৈতিক খবর ও দামের গতিপ্রকৃতির মধ্যে যোগসূত্র খুঁজে বের করা জরুরি।
এটা পড়তে গিয়ে কঠিন লাগতে পারে, কিন্তু শুরু করলে দেখবেন ধাপে ধাপে সব বোঝা যাবে, আর অভিজ্ঞতা অর্জন করতে করতে এগিয়ে যেতে পারবেন।
পর্যালোচনা এবং মন্তব্য